শুনশান গিরিয়া।—নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কা মিথ্যা হল। ভোটের আগে রঘুনাথগঞ্জের গিরিয়া-সেকেন্দ্রায় ভুরি ভুরি বোমা মিলেছিল। ফি ভোটে তেতে উঠত ওই দুই অঞ্চল। এ দিন ভোটে অবশ্য কোনও অশান্তি ছিল না ওই দুই অঞ্চলে। রাজনৈতিক নানা পট-পরিবর্তনে গিরিয়া-সেকেন্দ্রার রাজনৈতিক ভরকেন্দ্রে এখন চালকের আসনে তৃণমূল। এ দিন ভোটের পর ওই দুই অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব থাকবে বলে আশাবাদী কংগ্রেস।
রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভার ৩০টি বুথ নিয়ে সন্ত্রাসের আশঙ্কা করেছিল কংগ্রেস। ভোট শেষের পর কংগ্রেস প্রার্থী আখরুজ্জামান বলছেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ ভোট দিয়েছেন নির্ভয়ে। তার ফলে গিরিয়া ও সেকেন্দ্রার মানুষ এখনও কংগ্রেসের সঙ্গেই।” ওই এলাকার এসএফআইয়ের জোনাল সম্পাদক মিজানুর রহমান বলছেন, “কংগ্রেসের ভরসার কারণ জোটের শক্তি। জেলার যেখানেই জোট হয়েছে খড়কুটোর মত উড়ে গেছে তৃণমূল। গিরিয়া-সেকেন্দ্রাতেও সেই অঙ্কই কাজ করেছে।’’
ভোট শান্তিতে হয়েছে, তা বলছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাইদুল মিঞা বকুলও। তাঁর কথায়, “ওই দুই পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। তাই মানুষ জেনে বুঝেই শান্তিতে ভোট দিয়েছে। কংগ্রেস এই শান্তির মধ্যে ভরসা খুঁজতে পারে। কিন্তু এই দুই পঞ্চায়েতেই তৃণমূল প্রার্থী অন্তত সাত হাজার ভোটের লিড নিয়ে এগিয়ে থাকবে।”
২৪ হাজার ভোট রয়েছে দুই পঞ্চায়েতে। ভোট পড়েছে প্রায় ৮৫ শতাংশ। কোনও কোনও বুথে ভোট পড়েছে ৯০ শতাংশের উপরে। জোটের দাবি, ওই দুই পঞ্চায়েতে তারাই এগিয়ে থাকবেন।
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া পদ্মা পাড়ের দুই গ্রাম পঞ্চায়েত গিরিয়া, সেকেন্দ্রা। রাজ্যের শাসকদল ক্ষমতা দখল করে ওই দুই পঞ্চায়েতে। কার্যত শাসকদলের মুক্তাঞ্চলে পরিনত হয় ওই দুই তল্লাট।
বাম জমানায় দুই পঞ্চায়েতই ছিল সিপিএমের দখলে। ২০০৯ সালে তার দখল নেয় কংগ্রেস। ২০১৩ সালে কংগ্রেসের দখল করা দুই পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ সদস্যই এখন তৃণমূলে। তৃণমূলের মিছিল, মিটিংয়ের বড় ভরসা এই মুক্তাঞ্চল। এই এলাকারই বাসিন্দা বাম জমানায় এসএফআই জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন বর্তমান তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সইদুল মিঞা বকুল।
এ দিন ভোটের শেষে আত্মপ্রত্যয়ী সইদুল অবশ্য বলছেন, “ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। আগে দু’সপ্তাহ আগে থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়ে যেত। এবার তা হয়নি। মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিয়েছেন। এই লক্ষণের মধ্যে কংগ্রেস জয় দেখতে পেলে কিছু বলার নেই। ইভিএম খুললেই দেখবেন দুই এলাকার বাসিন্দারা কোন দলকে বেছে নিলেন।’’ ব্লক কংগ্রেসের সম্পাদক প্রকাশ সাহা সেকেন্দ্রার বাসিন্দা। প্রকাশের কথায়, “৩০টি বুথের মধ্যে ১০টিতে এজেন্ট দিতে পারেনি কংগ্রেস। ভয়ে, আতঙ্কে সিঁটিয়ে আছেন অনেকেই। গরু পাচারকারীরা শাসক দলের ছত্রছায়ায়।’’