খুন-সহ একাধিক অপরাধমূলক ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অস্ত্র আইনে মাস কয়েক আগে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। আবার ইতিমধ্যেই নির্দল হিসেবে রাজারহাট-নিউ টাউন কেন্দ্রের প্রার্থীও হয়েছেন তিনি। তবে নিজের বিরুদ্ধে থাকা সেই সব মামলার কোনও তথ্যই সমীর সর্দার ওরফে ভজাইয়ের নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় নেই।
নির্বাচন কমিশনের প্রাক্তন এক আধিকারিকের দাবি, প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও মামলা থাকলে মনোনয়ন পত্রে তা উল্লেখ করতে হবে। না হলে তা শুধু তথ্য চেপে দেওয়াই নয়, ভুল তথ্য পেশ করা হয়েছে বলেও গণ্য করা হবে।
পুলিশ রেকর্ড বলছে, কয়েক মাস আগেই নিউ টাউনে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি নির্মাণস্থলে নির্মাণসামগ্রী ফেলাকে কেন্দ্র করে অস্ত্র আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন ভজাইবাবু। এর আগে ২০০৯-এ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে ভজাইবাবু যখন সিপিএমের কর্মী, তখন নিউ টাউনের বালিগড়িতে খেজের আলি নামে এক তৃণমূলকর্মী খুন হন। সেই ঘটনায় ভজাইবাবুর নামে এফআইআর হয়েছিল। তার আগে নাজির আলি নামে আর এক তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনাতেও এফআইআর হয় তাঁর নামে। নিউ টাউনে ভজাইবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনের দাবি, ২০১১ সালে তাঁদের শিবিরের কর্মী জমিরুদ্দিন খুন হন। ভজাইবাবু তখন তৃণমূলে। জমিরুদ্দিন তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীতে ছিলেন। সেই মামলাতেও ছিল ভজাইবাবুর নাম। এ ছাড়াও পুলিশ জানাচ্ছে, তোলাবাজি, মারপিটের একাধিক ঘটনায় ভজাইবাবুর নামে এফআইআর হয়েছে।
এ দিকে, নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় দেখা গিয়েছে সেই সব ঘটনার কোনও তথ্যেরই
উল্লেখ নেই।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, প্রার্থীর মনোনয়ন পত্রে যে তথ্য থাকে, তা নথিবদ্ধ করে রাখা হয়। কমিশন সেই তথ্য তখনই যাচাই করে, যখন তা চ্যালেঞ্জ করে কোনও অভিযোগ জমা পড়ে। এ ক্ষেত্রে ভজাই সর্দার যে তথ্য জমা দিয়েছেন, সে সম্পর্কে কি কেউ অভিযোগ করবেন?
এ প্রসঙ্গে রাজারহাটের সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ দাশগুপ্ত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এটি সত্যি হলে ওই নির্দল প্রার্থী তো কমিশনের কাছে তথ্য গোপন করছেন। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে আমরা জানাব। তবে তার আগে আমরাও একটু খোঁজ নিয়ে নিই।’’
বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রের বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী অরুণাভ ঘোষের দাবি, কোনও ফৌজদারি মামলা থাকলে মনোনয়ন পত্রে তা উল্লেখ করতেই হয়। না হলে তা তথ্য চেপে দেওয়ার সামিল। তা আইনবিরুদ্ধ কাজ। অভিযোগ হলে মনোনয়ন বাতিল হওয়ার যোগ্য।
যদিও এ প্রসঙ্গে রাজারহাট-নিউ টাউন কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্তের সুর অবশ্য ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘‘আমি পুলিশ নই, আদালতের মুহুরিও নই। কার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ রয়েছে বলতে পারব না। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, যেখানে অভিযোগ, তাঁরাই বলতে পারবেন।’’
যদিও জল্পনা ছড়িয়েছে, ভোট নিশ্চিত করতে সব্যসাচীবাবুই নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন ভজাইবাবুকে। কারণ নিউ টাউনে ভজাইবাবু বিদায়ী বিধায়ক সব্যসাচীবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
কিন্তু কেন ভজাইবাবুর কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় মামলার প্রসঙ্গ নেই কেন, ব্যাখ্যা চাইতে তাঁকে একাধিক বার মোবাইলে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও