প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের আসন বাড়ার ইঙ্গিত, আসন কমতে পারে বিজেপির— সিএনএক্স-এর দ্বিতীয় দফা জনমত সমীক্ষার এই ফল।
রাজ্যে ২৯৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১৭টি বেছে নিয়ে ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে এই সমীক্ষা করা হয়েছে। তখনও পর্যন্ত কোনও দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়নি। মোট ৯ হাজার ৩৬০ জনের মতামতের ভিত্তিতে সিএনএক্স- এবিপি আনন্দ সমীক্ষায় যে ইঙ্গিত উঠে এসেছে, তাতে তৃণমূলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা স্পষ্ট। বলা হয়েছে, তৃণমূল পেতে পারে ১৫৪ থেকে ১৬৪। বিজেপি জিততে পারে ১০২ থেকে ১১২। বাম – কংগ্রেস পেতে পারে ২২ থেকে ৩০ এবং অন্যেরা পেতে ১ থেকে ৩ আসন।
এই ধরনের সমীক্ষার ফল অনেক সময়ই মেলে না। তবে ভোট- ভবিষ্যৎ বোঝার ক্ষেত্রে এই ধরনের জনমত সমীক্ষা একটি স্বীকৃত পদ্ধতি।
এ রাজ্যের ভোট নিয়ে সিএনএক্স প্রথম সমীক্ষাটি করেছিল মাসখানেক আগে। সেখানে আসন-সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়েছিল, তৃণমূল পেতে পারে ১৪৬- ১৫৬। বিজেপি পেতে ১১৩- ১২১। বাম- কংগ্রেস ২০- ২৮ এবং অন্যেরা ১- ৩।
একক গরিষ্ঠতা পেতে হলে যে কোনও দল বা জোটকে কমপক্ষে ১৪৮ আসন পেতে হবে। সে দিক থেকে সিএনএক্স-এর প্রথম সমীক্ষায় তৃণমূলের নূন্যতম আসন সম্ভাবনা ১৪৮ ছোঁয়নি। এ বার তাদের দ্বিতীয় সমীক্ষায় সেই সম্ভাবনা কিছুটা উজ্জ্বল হয়ে কমপক্ষে ১৫৪-তে পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ আসন পাওয়ার সংখ্যা ১৫৬ থেকে ১৬৪-তে পৌঁছতে পারে, বলছে সমীক্ষা। অন্য দিকে, প্রথম সমীক্ষায় বিজেপির ন্যূনতম আসন ধরা ছিল ১১৩, এ বার তা কমে ১০২। একই ভাবে সর্বোচ্চ আসন প্রাপ্তির সম্ভাবনাও ১২১ থেকে কমে হয়েছে ১১২। বাম- কংগ্রেসের অবস্থান দুই সমীক্ষাতেই মোটামুটি এক। গত সমীক্ষায় ছিল ২০- ২৮। এ বার ২২- ৩০।
ভোট শতাংশে অবশ্য দুই সমীক্ষাতেই তৃণমূল একই জায়গায় দাঁড়িয়ে— ৪২%। তবে বিজেপির ভোট শতাংশ ৩৭ থেকে কমে ৩৪% হতে পারে বলে সমীক্ষায় ইঙ্গিত। তবে বাম- কংগ্রেসের ভোট শতাংশ ১৭ থেকে বেড়ে ২০ হতে পারে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে।
জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি বারের মতো এ বারেও এগিয়ে। কিন্তু দুর্নীতি এবং পরিবারতন্ত্রের ক্ষেত্রে তাঁর দলের খুব ভাল ছবি সমীক্ষায় ফুটে ওঠেনি। তৃণমূলের দুর্নীতির কথা বলেছেন ৫৯%, পরিবারতন্ত্রের দিকে আঙুল তুলেছেন ৬৯% আর সাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছেন ৪০%। বিজেপির ক্ষেত্রে আবার সাম্প্রদায়িকতার তকমা দিয়েছেন ৬০%, দুর্নীতি ৪১% আর পরিবারতন্ত্র ৩১%।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩৮% মানুষ মনে করেন মমতা ‘এটা আমার ভোট’ বলায় লাভবান হবেন। ৩৩% মনে করেন, তাতে লাভ হবে না। আবার মতামত জানাতে পারেননি ২৯% উত্তরদাতা। একই ভাবে শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগে তৃণমূল ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন ৪৯%। আর ৩২% মনে করেন তা হবে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হল, ১৯% মানুষ এই প্রশ্নে কোনও স্পষ্ট মত দেননি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যে পরিমাণ উত্তরদাতা সরাসরি উত্তর দেননি, তাতে সামান্য হেরফের হলেও মূল ছবিটি অনেক বদলে যেতে পারে। এই সমীক্ষায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতাকে পছন্দ করেছেন শতকরা ৪৩ জন। বিজেপির দিলীপ ঘোষ ২৪%-এর সমর্থন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে। আর ৬১% ভোটার এই সমীক্ষায় জানিয়েছেন, বিজেপি সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলে ভোটে লাভবান হতে পারে।