প্রার্থী তালিকায় থাকছেন না সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। প্রার্থী হতে পারেন ছাত্রনেতা ঐশী ঘোষ ও শতরূপ ঘোষ।
বাম জমানার শেষের দিকে প্রায়ই অভিযোগ উঠত, বৃদ্ধতন্ত্র চেপে বসেছে রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বে। আর তার জেরেই নতুন প্রজন্ম উঠে আসেনি মুজফ্ফর আহমেদ ভবনের অলিন্দে। কিন্তু নীলবাড়ির লড়াইয়ে এ বার সেই সিপিএমই প্রার্থী করতে চলেছে একঝাঁক নতুন মুখকে। সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো বেশ কিছু প্রবীণ বাম নেতা এ বার থাকছেন না বাম প্রার্থী তালিকায়।
আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিটে এখন জোর তৎপরতা নির্বাচন ঘিরে। দফায় দফায় বৈঠক চলছে বামফ্রন্টের শরিকদল-সহ কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) নেতাদের সঙ্গে। তারমধ্যেই ঘরে গুছিয়ে নতুন প্রার্থীদের ভোট ময়দানে নামানোর নীল নকশাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। এ বার প্রার্থী তালিকায় থাকছেন না সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পর পর ছয়বার নারায়ণগড় বিধানসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন তিনি। ব্যতিক্রমী ভাবে রাজ্য সম্পাদকের পদে থেকেও ২০১৬ সালের ভোটে লড়াই করেছিলেন তিনি। কারণ সিপিএমের ইতিহাসে জ্যোতি বসুর পর সূর্যকান্তই এমন একজন সিপিএম নেতা যিনি রাজ্য সম্পাদক হয়েও পরিষদীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত পাঁচ দশক ধরে প্রমোদ দাশগুপ্ত, শৈলেন দাশগুপ্ত, অনিল বিশ্বাস বা বিমান বসু, যাঁরাই রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন ভোটে ল়ড়েননি কেউ। এ বার সূর্যকান্তর বদলে নারায়ণড়ে প্রার্থী হবেন প্রাক্তন ডিওয়াইএফআই-র সভাপতি তাপস সিংহ। এই মুহূর্তে রাজ্য সিপিএম নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবেই তাঁর পরিচিতি।
প্রার্থিতালিকায় থাকতে পারেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন করে উঠে আসা দীপ্সিতা ধর ও ঐশী ঘোষ। দীপ্সিতা প্রার্থী হতে পারেন হাওড়ার বালি বিধানসভা কেন্দ্রে। ঐশী প্রার্থী হতে পারেন দূর্গাপুর পূর্বে। সঙ্গে মধুজা সেনরায় প্রার্থী হবেন ঝাড়গ্রামে। ঐশী ও দীপ্সিতা ভোটের ময়দানে প্রথমবার হলেও, মধুজা ২০১৬ সালের নির্বাচনে টালিগঞ্জ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ২০১১ ও ২০১৬ সালের পর ফের একবার কসবা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারেন ছাত্রনেতা শতরূপ ঘোষ। ডিওয়াইএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র প্রথমবারের জন্য ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি প্রার্থী হতে পারেন বরাহনগরে। এ ছাড়াও ছাত্রনেতা দেবজ্যোতি দাসকে প্রার্থী করা হতে পারে বীজপুর কিংবা খড়দহ আসনে। ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে পাণ্ডবেশ্বর অথবা কুলটিতে প্রার্থী করার ভাবনায় আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিট। ২০১৫ সালে পুরভোটে তৃণমূলের প্রবীণ কাউন্সিলর শ্যামাদাস রায়কে হারিয়ে উঠে আসেন যুবনেতা নীহার ভক্ত। তিনি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে পারেন বেহালা পশ্চিমে।
তবে নতুন মুখদের পাশাপাশি, অনেক অভিজ্ঞ সিপিএম নেতাও প্রার্থী হবেন বলে জানা গিয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন, শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্য, চণ্ডীতলায় মহম্মদ সেলিম, শালবনিতে সুশান্ত ঘোষ, কামারহাটিতে মানস মুখোপাধ্যায়, যাদবপুরে সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ।