অনিল দত্ত। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দেড় বছর আগের একটি মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় নাম ছিল পূর্ব বর্ধমান (গ্রামীণ) বিজেপি-র সহ-সভাপতি অনিল দত্তের। সেই মামলায় কাটোয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গিয়ে জেল হেফাজতে যেতে হল তাঁকে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিণক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর পুরনো মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়। পুরনো সব গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গ্রেফতারি এড়াতে ২০১৯ সালের জুলাইয়ের এক মামলায় অভিযুক্ত অনিল জামিনের আবেদন নিয়ে আত্মসমর্পণ করতে যান আদালতে। কিন্তু জামিন তো মেলেইনি উল্টে তাঁকে ১২ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভোটের মুখে দলের নেতার এমন হাজতবাসের ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছে বিজেপি। তবে অনিলের দাবি গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
২০১৯-এর ১৯ জুলাই ঘটনার দিন কেতুগ্রাম ১ নম্বর বিডিও অফিসে বিজেপির ডেপুটেশন ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। বিডিও অফিসের সামনে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজি হয় বলেও অভিযোগ।
ওই দিন কেতুগ্রামে রাজুর গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মুশা শেখ কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগ ছিল আগের দিন তিনি এবং তাঁর বন্ধু বিকাশ দাস যখন কাঁদরায় বিডিও অফিস যাচ্ছিলেন তখন কয়েক জন তাঁদের পথ আটকায়। হাতে ছিল লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র। তাঁদের মারধর করা হয়। স্থানীয় পথচারী এক মহিলাকে আটকে শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ মুশার। ওই দিন মুশা স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবব্রত মণ্ডল-সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মারধর আগ্নেয়াস্ত্র দেখানো বোমাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন।
মুশার অভিযোগে নাম জড়ায় অনিলেরও। পুলিশ ওই মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়।তবে বাকিরা জামিন পেয়ে গেলেও অনিল জামিন পাননি। তিনি এত দিন পুলিশের খাতায় ফেরার ছিলেন।
অনিল বলেন, “২০১৯ সালে আমাদের দলীয় কর্মসূচি হিসাবে রাজ্যব্যপী বিভিন্ন ব্লকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল। কেতুগ্রাম ১ নম্বর বিডিও অফিসে কর্মসূচির সময় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। শাসক দল এবং পুলিশ মিলে চক্রান্ত করে বিজেপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। আমি ওই দিন কেতুগ্রামে না থাকলেও আমার নামে মামলা দেওয়া হয়।"
অনিলের আইনজীবী জয়ন্ত দে বলেন, "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন জানাব।’’