বিকেল থেকেই থাবা বসাল কেষ্টর বাহিনী

কোথাও বিল কোথাও বা বোরো ধানে ভরা মাঠ— বীরভূম আর মুর্শিদাবাদের সীমানা এঁকে দেওয়া সেই সব মাঠ-ঘাট, জলা পেরিয়ে দিন কয়েক ধরেই তাদের আনাগোনা দেখছিলেন মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুর আর মান্দ্রার বাসিন্দারা।

Advertisement

কৌশিক সাহা

বড়ঞা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৯
Share:

কোথাও বিল কোথাও বা বোরো ধানে ভরা মাঠ— বীরভূম আর মুর্শিদাবাদের সীমানা এঁকে দেওয়া সেই সব মাঠ-ঘাট, জলা পেরিয়ে দিন কয়েক ধরেই তাদের আনাগোনা দেখছিলেন মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুর আর মান্দ্রার বাসিন্দারা।

Advertisement

বীরভূমের ভোট পর্ব মিটতেই অনুব্রত মণ্ডলের সাগরেদরা মুর্শিদাবাদে ‘ভোট করাতে’ নামবে— দিন কয়েক ধরে সে অভিযোগ করছিলেন কান্দি, বড়ঞা কিংবা ভরতপুরের কংগ্রেস নেতারা। জোট শিবির এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিল নির্বাচন কমিশনকেও। তাতে যে কমিশনের কর্তারা আমল দেননি, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই তা টের পেল সুন্দরপুর।

শাসক দলের বহিরাগত ‘ভোট কর্মীরাই দাপিয়ে বেড়াল মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুর থেকে মজলিশপুর, বিস্তীর্ণ এলাকা। বাধা দিতে গিয়ে কোথাও আক্রান্ত হলেন জোট কর্মী। কোথাও বা অচেনা মুখ দেখে ‘কোন গ্রাম থেকে আসা হয়েছে গো’, প্রশ্ন করে ধমক খেলেন নিতান্তই কৌতূহলী গ্রামবাসী। যা দেখে বড়ঞার কংগ্রেস প্রার্থী প্রতিমা রজক বলছেন, ‘‘পুলিশকে অনেক দিন আগেই এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল। কানেই তুলল না!’’

Advertisement

দিন কয়েক আগেই মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের এক নেতা কবুল করেছিলেন, ‘‘বীরভূম থেকে গুড় বাতাসা নিয়ে লোকজন এসে পড়বে!’’ এ দিন সকালে তেমন চোখে না পড়লেও, বিকেল থেকেই তাদের দৌরাত্ম্যে কাঁপল বীরভূম সীমানা ঘেঁষা গ্রামগুলি। অভিযোগ পেয়ে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিকেলে কমিশনের এক কর্তা জানান, ওই এলাকা থেকে অন্তত ১৮ জন বহিরাগত গ্রেফতার হয়েছে।

মুর্শিদাবাদ পুলিশের এক কর্তা জানান, বীরভূমের ওই বহিরাগতদের ঠিকানা ছিল সুন্দরপুর লাগোয়া বাহাদুরপুরের একটি বিয়ে বাড়ি। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ঘোষণা ছিল, ‘‘বিয়ের নেমন্তন্ন খেতেই বাহাদুরপুর আসছে অনুব্রত মণ্ডলের লেঠেলরা। তাদের ঠেকাবে কে!’’

কিন্তু দিনভর ‘ঘাপটি’ মেরে বিকেলে খোলস ছেড়ে বেরল কেন তারা? স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি— ‘‘সকালে ভিড় দেখে বেরোতে সাহস পায়নি ওই বহিরাগতরা। তৃণমূলের হার অবশ্যম্ভাবী জেনে বিকেলে তাই মরিয়া হয়ে শেষ চেষ্টা করেছিল তারা।’’ কোথাও স্থানীয় তৃণমূল নেতার মোটরবাইকের পিছনে কোথাও দল বেঁধে তারা বুথের সামনে জড়ো হতে থাকে। ভোট দিতে এলে গ্রামবাসীদের লাঠি উঁচিয়ে তাড়িয়ে দিতেও দেখা যায়। তবে, তাদের বুথ দখলের চেষ্টা তেমন কাজে দেয়নি বলেই জোটের নেতা-কর্মীদের দাবি।

তবে সুন্দরপুরের পঞ্চায়েত প্রধান তৃণূলের নজরুল হক অবশ্য বলছেন, ‘‘যাদের ধরা হয়েছে তারা কেই বহিরাগত নয়।’’ তাহলে গ্রেফতার করা হল কেন? উত্তর না দিয়ে মোটরবাইকে র্স্টাট দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement