চড়াবিদ্যার মোড়ে ঝাঁটা হাতে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: সামসুল হুদা।
কোনও মোড়ে ঝাঁটা হাতে দাঁড়িয়ে পুরুষ-মহিলারা। কোনও মোড়ে প্ল্যাকার্ড নিয়ে। এ ভাবেই শনিবার বাসন্তীর আঠারোবাঁকি পঞ্চায়েত এলাকায় জোটপ্রার্থী আরএসপি-র সুভাষ নস্করের প্রচারে ফের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শেষমেশ অনেক গ্রামে ঢুকতে না পেরে একটি ভ্যানরিকশায় উঠে সুভাষবাবু প্রচার সারেন। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের দাবি, প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় গ্রামবাসীরাই ওই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
গত বুধবারই শিমুলতলা হাসপাতাল মোড়ে এবং কালীপদ মোড়ের কাছে সুভাষবাবুর প্রচারে বোমা মারার হুমকি ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই দিন আরএসপি কর্মী-সমর্থকেরা আক্রান্তও হন। তাঁদের বাঁচাতে গেলে সুভাষবাবুকে হেনস্থাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই গোলমালের ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে ধরতে পারেনি। তার পর ফের এ দিনের বাধা।
সুভাষবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চাইছে। ওরা আমাকে মানুষের কাছে যেতে দিচ্ছে না। এতেই বোঝা যাচ্ছে যে ওরা ভয় পাচ্ছে। ওরা মানুষকে ভয় দেখিয়ে ভোট লুঠ করতে চাইছে। কিন্তু তা হবে না। আমরা কমিশনকে সব কিছু জানিয়েছি।’’ পক্ষান্তরে, বাসন্তী ব্লক তৃণমূল সভাপতি মন্টু গাজির দাবি, ‘‘আমরা সুভাষবাবুর প্রচারে বাধা দিইনি। ওঁরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। গত বার ভোটে জেতার পর সুভাষবাবু ওই এলাকায় একবারও যাননি। মানুষের কোনও প্রত্যাশা পূরণ করেননি। তাই মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।’’
বাসন্তীর রিটার্নিং অফিসার স্বাতী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিরোধীদের মিছিলে বাধা দানের অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে বলেছি, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। আমারা সব দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ আঠারোবাঁকি পঞ্চায়েত এলাকায় ভ্যানরিকশায় চড়ে সুভাষবাবু কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারে বের হন। আঠারোবাঁকি, চড়াবিদ্যা, মিলন বাজার, গাববুনির মতো বেশ কিছু মোড়ে মিছিল পৌঁছনোর পরই বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতেই ছিল তৃণমূলের দলীয় পতাকা। চড়াবিদ্যার কাছে ওই মিছিল আটকানোর পরে কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়ে বেশ কিছুক্ষণ অবরোধও করা হয়। সুভাষবাবুর কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে অবরোধকারীদের সঙ্গে বচসা বাধে। শেষমেষ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পুলিশ মিছিলটি সেখান থেকে বের করে দেয়।
আরএসপি কর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন, পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল ঠিকই। তা সত্ত্বেও মিছিলকে গ্রামে ঢোকাতে পুলিশ উদ্যোগী হয়নি। সেই অভিযোগ খণ্ডন করে এসডিপিও (ক্যানিং) সৌম্য রায় দাবি করেছেন, মিছিল যেখানে যেতে চেয়েছে, সেখানেই যাওয়ার ব্যবস্থা করে
দেওয়া হয়েছে।