বিতর্কে বীরভূম পুলিশ

তৃণমূলের মঞ্চে ফেরার নেতা, ধরলই না পুলিশ

গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা অভিযুক্তদের ধরতেই হবে, নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই নির্দেশ পালনে বীরভূম পুলিশ কতটা সক্রিয় হয়েছে, তৃণমূলের সভামঞ্চে দলীয় কর্মী খুনে অভিযুক্ত এক নেতার উপস্থিতি সেই প্রশ্ন তুলে দিল শনিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নানুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৩
Share:

গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা অভিযুক্তদের ধরতেই হবে, নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই নির্দেশ পালনে বীরভূম পুলিশ কতটা সক্রিয় হয়েছে, তৃণমূলের সভামঞ্চে দলীয় কর্মী খুনে অভিযুক্ত এক নেতার উপস্থিতি সেই প্রশ্ন তুলে দিল শনিবার।

Advertisement

এ দিন নানুরে তৃণমূল প্রার্থী গদাধর হাজরার সভার মঞ্চে দেখা যায় এলাকায় দলের দাপুটে নেতা আবদুল কেরিম খানকে, পুলিশের খাতায় যিনি চার বছর ধরে ফেরার। সভাস্থলে ছিল পুলিশ। কিন্তু ওই অভিযুক্তকে ধরার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ বীরভূমের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের। ফোন ধরেননি জেলার রিটার্নিং অফিসার তথা জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১২-য় নানুরের সাঁতরা গ্রামে জামাল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী বোমা-গুলিতে খুন হন। ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ৪০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। তাদের মধ্যে অনেকে গ্রেফতার হয়, কেউ-কেউ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেয়। কিন্তু, কয়েক জন অভিযুক্ত পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ই থেকে গিয়েছে। তাঁদেরই অন্যতম এই কেরিম, যিনি এখন দলের জেলা কমিটির সদস্য। রয়েছেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদেও।

Advertisement

এ দিন নানুরের বঙ্গছত্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গদাধরের সমর্থনে আয়োজিত সভায় জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর পাশেই ছিলেন কেরিম। মঞ্চের নীচেই ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নানুর থানার পুলিশ। এমনকী, হাজির ছিলেন ওসি সৌম্য দত্ত নিজে। তবু পরোয়ানা থাকা তৃণমূলের ওই দাপুটে নেতাকে ধরার সাহস কেউ দেখাননি। বিরোধীদের দাবি, শুধু এ দিন নয়, ভোটের মরসুমে বিভিন্ন সভা-সমাবেশেই কেরিমকে দেখা যাচ্ছে। পুলিশ কিছু করছে না।

ক’দিন আগেই বোলপুরে তিন গদাধর অনুগামীকে খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে দলেরই ব্লক তফসিলি ও আদিবাসী সেলের সভাপতি ভরত মাঝিকে ধরেছে পুলিশ। এলাকায় ভরত গদাধরের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা কাজল শেখের অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে গদাধরের হয়ে প্রচারে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তলায়-তলায় তিনি ‘অন্তর্ঘাত’ করতে পারেন, এমন আশঙ্কা থাকায় দলের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে পুলিশ ভরতকে গ্রেফতার করে বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি।

এ দিন নাগালে পেয়েও কেরিমকে পুলিশ কেন ধরল না, প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। যা নিয়ে অস্বস্তিতে পুলিশ-প্রশাসন। অভিযুক্ত কেরিম মেনে নিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদেরই কর্মী খুনে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় আমাকে ফাঁসিয়েছে। আগাম জামিনের আর্জি জানিয়েছি। দলের নির্দেশেই ভোটের কাজ করছি। কেন আমাকে গ্রেফতার করেনি, তা পুলিশই বলতে পারবে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement