নিজের অফিসে কাজ করছেন দিব্যেন্দু অধিকারী।ছবি:সোহম গুহ
অধিকারীগড়ের খাসতালুক দক্ষিণ কাঁথি। কেন্দ্র রক্ষার গুরুদায়িত্ব এ বারও শিশির অধিকারীর সেজো ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারীর উপর। ২০০৯ সাল থেকেই দিব্যেন্দু বিধায়ক হিসেবে খাসতালুক দক্ষিণ কাঁথি সামলে আসছেন। এ বার কী হবে?
দিব্যেন্দুবাবুর নির্লিপ্ত জবাব, “কী আর হবে, গত দু’বারের মত এ বারও জিতব।” রাত পোহালেই রাজ্যের সপ্তম ও শেষ দফার ভোট। তার ১৯ ঘণ্টা আগেও তিনি স্বচ্ছন্দ ও স্বাভাবিক। ভোট নিয়ে টেনশন? চিহ্নমাত্র নেই চোখেমুখে। অন্যান্য দিনের মত বুধবারও সকালে ঘুম থেকে উঠে একমাত্র মেয়ে তিয়ানকে আদর করেছেন, বিভিন্ন খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে মেয়েকে স্কুলে ছেড়ে এসেছেন নিজেই। বেলা সাড়ে ১০টায় সোজা পুরসভায় যান। কাঁথির পুরসভার কাউন্সিলর নিজের অফিসে বসেই ভোট প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তের খবরাখবর নিয়েছেন। বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত পোলিং এজেন্টরা ভোট চলাকালীন প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গুছিয়ে নিয়েছেন কি না, তাঁদের খাবারের কী ব্যবস্থা হল— বাদ যায়নি কোনও কিছুই।
২০০৯ সালে দাদা শুভেন্দু অধিকারী তমলুকের সাংসদ হলে দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক পদ ছেড়ে দেন। উপনির্বাচনে জয়ী হন দিব্যেন্দু অধিকারী। তারপর ২০১১ বিধানসভাতেও বিধায়ক নির্বাচিত হন। পাশাপাশি ২০১০ সাল থেকে সামলেছেন পুর কাউন্সিলরের দায়িত্বও। সেও পর পর দু’বার। এ বার বিধানসভায় জিতে জয়ের হ্যাটট্রিক যে তিনি করবেনই সে বিষয়ে একশোভাগ নিশ্চিত দিব্যেন্দু। তাঁর কথায়, “শুধু জিতছিই না, গতবারের চেয়ে জয়ের ব্যবধান অনেক বেশি হবে।”
এতটা নিশ্চিন্ত কেন? দিব্যেন্দুর জবাব, “বছরের ৩৬৫দিনই দলমত নির্বিশেষ মানুষের সঙ্গে থাকি। ৩৪ বছর ধরে উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ কাঁথির উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি গত সাত বছরে।” উন্নয়নের খতিয়ান দিতে দিতে দিব্যেন্দু জানান, দু’টি কাঠের সেতুর বদলে নতুন পাকা সেতু তৈরি হয়েছে, রাস্তাঘাট, বিদ্যুদয়ন, ঢালাই পাকা রাস্তা, সেচের জন্য একাধিক খাল সংস্কার, মহকুমা হাসপাতাল আধুনিকীকরণ, অরবিন্দ স্টেডিয়াম সংস্কার ও ঐতিহ্যমণ্ডিত কাঁথি টাউন হল সংস্কার সব কিছুর নিরিখেই তৃণমূলকে ভোট দেবেন মানুষ।
দিব্যেন্দুকে জেতাতে বদ্ধপরিকর তৃণমূলের কর্মীরাও। তাঁদের দাবি, ‘‘দাদাকে কাঁথির মানুষ রাজনৈতিক রঙের বিচার না-করে আপদে বিপদে সবসময়ই কাছে পান। দক্ষিণ কাঁথিতে স্থানীয় উন্নয়ন নিয়ে বিরোধীদেরও অভিযোগ করার মত কিছুই নেই।”
বিরোধী জোটের প্রার্থী সিপিআইয়ের উত্তম প্রধান অবশ্য বলছেন, “পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন অধিকারীরা। তৃণমূলের সীমাহীন দুর্নীতি আর কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের পরিবারতন্ত্র বদলের জন্যই মানুষ এ বার সারা রাজ্যের সঙ্গে দক্ষিণ কাঁথিতেও পরিবর্তন আনবেন।’’