সংসদের অধিবেশন শেষের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চৌধরি চরণ সিংহকে অপমান করার অভিযোগ তুলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় দাবি করলেন, এই আঘাত পেয়ে তিনি পদত্যাগ করার কথাও ভেবেছিলেন।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদের বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন ছিল শনিবার। কার্যসূচি অনুযায়ী ঠিক ছিল, শনিবার রাজ্যসভায় শুধু মাত্র অর্থনীতি নিয়ে মোদী সরকারের শ্বেতপত্র ও রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে আলোচনা হবে। অধিবেশন শুরু হতে দেখা গেল রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধরি তাঁর পিতামহ, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী চৌধরি চরণ সিংহকে ভারতরত্ন দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুণগান করছেন।
জয়ন্ত চৌধরি এত দিন বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-য় ছিলেন। তাঁর সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির আসন সমঝোতাও হয়ে গিয়েছিল। সেই জয়ন্ত এ বার বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে চলেছেন। শুক্রবার চরণ সিংহকে ভারতরত্ন দিয়ে সেই পথই প্রশস্ত করেছে বিজেপি।
স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেসের নেতারা জয়ন্তকে টিকাটিপ্পনি করতে শুরু করেন। জয়ন্তকে কটাক্ষ করে জয়রাম রমেশ বলেন, তিনি যেখানে যাওয়ার যেতে পারেন। জয়ন্ত বলেন, চরণ সিংহকে ভারতরত্ন কোনও জোট গড়া বা জোট ভাঙা এবং নির্বাচনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা উচিত নয়। কংগ্রেস সভাপতি তথা বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে প্রশ্ন তোলেন, ধনখড় কোন নিয়মে ভারতরত্ন নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিলেন! ধনখড়ের নিয়ম মেনে চলা উচিত, নিজের ক্ষমতা ঠিক মতো প্রয়োগ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন খড়্গে।
এর পরেই ধনখড় তোপ দাগেন। তিনি অভিযোগ তোলেন, চৌধরি চরণ সিংহের অপমান করা হয়েছে। কৃষকদের অপমান করা করা হয়েছে। চরণ সিংহের মতো তিনিও জাঠ ও কৃষক-পুত্র বলেও জানান ধনখড়। জয়রাম রমেশ সম্পর্কে ধনখড় বলেন, তিনি রাজ্যসভায় থাকারই যোগ্য নন। জয়রাম শ্মশানেও বনভোজন করতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন ধনখড়। কংগ্রেস নেতারা যুক্তি দেন, তাঁরা চরণ সিংহকে কেন ভারতরত্ন দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। এ নিয়ে কেন ধনখড় আলোচনা শুরু করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ধনখড় বলেন, জয়ন্ত তাঁকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলেন বলেই তিনি সুযোগ দিয়েছেন। কর্পূরী ঠাকুর ভারতরত্ন পাওয়ার পরেও তিনি তাঁর পুত্র রাজ্যসভার সাংসদ রামনাথ ঠাকুরকে বলতে দিয়েছিলেন।
ধনখড় পরে বলেন, কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগে তিনি মানসিক ভাবে আঘাত পেয়েছেন। তাই তিনি পদত্যাগের কথাও ভেবেছিলেন। কিন্তু তিনি উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলে সেই ভাবনা থেকে সরে এসেছেন। ধনখড় বলেন, ‘‘জীবনে কঠিন সময় এসেছে। পূর্ণবয়স্ক ছেলেকে হারিয়েছিল। কিন্তু এ দিনের যন্ত্রণা তার থেকেও বেশি।’’ কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল পরে বলেন, কংগ্রেসের সমর্থনেই চৌধরি চরণ সিংহ প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এর পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কংগ্রেসকে দুষে বলেন, ইন্দিরা গান্ধীর জন্য চরণ সিংহকে এক মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল।