কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র ।
তৃণমূল প্রথমে অপরাধ করে, পরে সেই অপরাধ ঢাকতে আরও ভুল করে। সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বাংলার শাসকদলকে আক্রমণ করে তেমনটাই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সম্প্রতি সন্দেশখালি নিয়ে একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ভিডিয়োগুলি প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, সন্দেশখালিতে যে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, তা ‘সাজানো’ এবং বাংলাকে কলুষিত করতেই সন্দেশখালির মহিলাদের দিয়ে ধর্ষণের ‘মিথ্যা অভিযোগ’ দায়ের করানো হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে এ বার মুখ খুললেন শাহ। যদিও সরাসরি ভাইরাল ভিডিয়ো প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য তিনি করেননি।
‘ইন্ডিয়া টুডে টিভি’র সাক্ষাৎকারে শাহকে সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বহু বছর ধরে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য ধর্মের ভিত্তিতে নারীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, যিনি নিজে একজন মহিলা, এই নির্যাতন বন্ধ করার জন্য কোনও পদক্ষেপ করেননি।’’
সন্দেশখালিতে ধর্ষণের অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে তৃণমূল যে দাবি তুলেছে তা নিয়েও রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শাহের কথায়, ‘‘তৃণমূলের একটা নির্দিষ্ট ছক রয়েছে। প্রথমে তারা অপরাধ করে, তার পর প্রথম অপরাধ ভুল প্রমাণ করার জন্য আরও অপরাধ করে। কলকাতা হাই কোর্ট এবং মহিলারা কি মিথ্যা বলছেন? সিবিআই তদন্ত কি ভুল?’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সন্দেশখালির ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। গোপন ক্যামেরায় বন্দি এক ভিডিয়োয় বিজেপিরই সন্দেশখালি-২-এর মণ্ডল সভাপতিকে বলতে শোনা গিয়েছে, সেখানকার আন্দোলন গোটাটাই ‘সাজানো’। এই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কাউকে ধর্ষণ করা হয়নি। পরে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সন্দেশখালির মহিলা অভিযোগকারিণীরাও। একের পর এক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ওই সমস্ত ভিডিয়োরও সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। একের পর এক ওই সমস্ত ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্যে কিছুটা চাপে পড়ে বিজেপি। প্রকাশ্যে মেজাজ হারাতে দেখা যায় শুভেন্দুকে। কিন্তু গত কয়েক দিনে পশ্চিমবঙ্গে জনসভা করতে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যাঁকে শুভেন্দুর দিল্লির ‘মেন্টর’ বলেই জানেন রাজনীতির কারবারিরা, ওই ভিডিয়ো প্রসঙ্গে একটি কথাও বলতে শোনা যায়নি। বরং পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন বাংলার শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধেই।
প্রশ্ন উঠছিল, তবে কি জেনেবুঝে এবং কৌশলগত ভাবেই সন্দেশখালির ভিডিয়ো প্রসঙ্গ এড়িয়ে সন্দেশখালির আন্দোলন প্রসঙ্গে জিইয়ে রাখছেন শাহ? কারণ, যে সন্দেশখালি নিয়ে বাংলার বিজেপি নেতারাই কিছুটা সুর নামিয়েছেন, সেখানে শুক্রবার অমিত বারে বারেই টেনে এনেছেন সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সমর্থনে রানিগঞ্জের রোড-শোতেও শাহকে বলতে শোনা গিয়েছে, “সন্দেশখালির মতো ঘটনায় যুক্তদের জেলে পাঠাতে হবে কি না? মমতাদিদি কি এটা করতে পারবেন?” তবে এ বার সন্দেশখালির ধর্ষণের অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে যে দাবি তৃণমূল তুলেছে, তা নিয়ে বাংলার শাসকদলকে নিশানা করলেন শাহ।