গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সামনে রইলেন মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। পাশে রইলেন এই লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে সিপিএমের পাঁচ মহিলা প্রার্থী। দলের মহিলা ব্রিগেডকে সামনে রেখে ‘লেডিজ় স্পেশাল’ ঘোষণা করল সিপিএম। ১৫ দফা ঘোষণায় বলা হয়েছে, সিপিএম প্রার্থীরা যেখানে নির্বাচিত হবেন, সেই কেন্দ্রগুলিতে মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মণিপুর, হাথরস, উন্নাও থেকে সন্দেশখালির ঘটনার প্রেক্ষিতে আলাদা গুরুত্ব আরোপ করা হল মেয়েদের আত্মরক্ষার বিষয়ে।
প্রতিশ্রুতির মূল অংশ দু’টি। এক, গড়ে তোলা হবে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি। দুই, গড়ে তোলা হবে মহিলা আত্মমর্যাদা কেন্দ্র। সিপিএমের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, গার্হস্থ্য হিংসা, যৌন হেনস্থার মতো বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি। মহিলাদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেবে তারা, গড়ে তোলা হবে মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রবিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে মিনাক্ষী বলেন, ‘‘একজন মহিলার মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যা যা দরকার, যে মৌলিক বিষয়গুলি নিশ্চিত হওয়া উচিত, আমাদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে সেই কাজগুলিতেই অগ্রাধিকার দেবেন।’’
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কী ভাবে বাস্তবায়িত করা হবে এই প্রতিশ্রুতি? সিপিএম তাদের ঘোষণাপত্রে জানিয়েছে, দলের প্রার্থীরা সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হলে সাংসদ তহবিলের এক-তৃতীয়াংশ টাকা শুধুমাত্র মহিলাদের জন্যই খরচ করা হবে। ‘মহিলা আত্মমর্যাদা কেন্দ্র’ শীর্ষক অংশে বলা হয়েছে, ঋতুকালীন মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ, স্বনির্ভর করে তোলার জন্য সমবায় গড়ে তোলার মতো বিবিধ বিষয়ের কথা। ঘোষণাপত্রে সিপিএম দাবি করেছে, তাদের পার্টির প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে ২০২৪ সালের মধ্যেই মহিলা আত্মমর্যাদা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। নির্যাতিতাদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি আলাদা ভাবে তুলে ধরা হয়েছে সিপিএমের ঘোষণাপত্রে।
লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পের জন্য বাংলার মহিলা ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অনেকটা ঝুঁকে রয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। লোকসভার আগে সেই প্রকল্পে এ বার বর্ধিত অঙ্ক পাচ্ছেন রাজ্যের দু’কোটি মহিলা। যে প্রকল্পকে মডেল করেছে দেশের অন্য একাধিক রাজ্যও। এ বার সিপিএমও মহিলা ভোটকে পাখির চোখ করে পয়লা বৈশাখে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করল। যাকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘সিপিএম নিজেরাও জানে ভোটে জিতবে না। প্রচারে ভেসে থাকার জন্য কিছু চটকদারি কথা বলেছে।’’
রবিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে মিনাক্ষী ছাড়া ছিলেন বোলপুরের সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান, শ্রীরামপুরের প্রার্থী দীপ্সিতা ধর, দক্ষিণ কলকাতার প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম, আসানসোলের প্রার্থী জাহানারা খান এবং ঝাড়গ্রামের প্রার্থী সোনামণি টুডু (মুর্মু)। তবে সিপিএমের মহিলা সংগঠনের কোনও প্রথম সারির নেত্রীর দেখা মেলেনি। যার ফলে দলের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে , যুব সংগঠন ছাড়ার পর মিনাক্ষীকেই কি মহিলা সমিতির মুখ করবে আলিমুদ্দিন?