(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী এবং অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ মন্তব্য নিয়ে তাঁর দল বিজেপি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে ইতিমধ্যেই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদকে নিশানা করলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা’ সংক্রান্ত মন্তব্য প্রসঙ্গে। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন সত্তরের দশকে রাহুলের ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর জারি করা জরুরি অবস্থার কথাও।
আপ নেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে রবিবার ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। দিল্লির রামলীলা ময়দানে ওই সমাবেশে রাহুল বলেন, ‘‘ইভিএম ছাড়া, ম্যাচ ফিক্সিং ছাড়া, সমাজমাধ্যম ছাড়া এবং গণমাধ্যমের উপর চাপ সৃষ্টি ছাড়া বিজেপির পক্ষে ১৮০টির বেশি আসন জেতা অসম্ভব।’’
নরেন্দ্র মোদীর জমানায় ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ এবং গণতন্ত্র হত্যার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘এখন আইপিএল চলছে। যখন আম্পায়ারদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়, খেলোয়াড়দের কিনে নেওয়া হয় এবং অধিনায়ককে হুমকি দেওয়া হয় ম্যাচ জেতার জন্য, সেটা ক্রিকেটে ফিক্সিং। সামনেই আমাদের লোকসভা ভোট আছে। সেখানে আম্পায়ারদের নিজেই বেছেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। আমাদের দুই খেলোয়াড়কে খেলার আগেই গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছে।’’
সেই সঙ্গে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে ১৩৫ কোটি টাকা জরিমানা কেটে নেওয়ার অভিযোগ করে রাহুল বলেন, ‘‘আমাদের ভোটের প্রচার করতে হবে। রাজ্যে রাজ্যে কর্মীদের পাঠাতে হবে। পোস্টার তৈরি করতে হবে। কিন্তু আমাদের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা কী রকমের নির্বাচন?’’ লোকসভা ভোটে বিজেপি জিতলে ভারতে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়বে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রাজস্থানের জোধপুরে বিজেপির সভায় রাহুলের মন্তব্যের জবাবে শাহ সোমবার বলেন, ‘‘উনি বোধহয় ভুলে গিয়েছেন যে ওঁর ঠাকুমা ইন্দিরার আমলেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে জেলে বন্দি করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা সকলের ন্যায়বিচারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ সেই সঙ্গে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে কটাক্ষ করে শাহের মন্তব্য, ‘‘শূন্যের সঙ্গে শূন্য যোগ করলে শূন্যই হয়। নরেন্দ্র মোদীই আবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।’’
প্রসঙ্গত, গত অগস্টে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কে গণতন্ত্রের উপর আঘাত ‘হত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। স্পিকার ওম বিড়লা সেই শব্দটি লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অনাস্থা বিতর্কেই বিজেপি সাংসদ তথা মোদীর মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ‘হত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করলেও তা ঠাঁই পেয়েছিল সভার কার্যবিবরণীতে।