Election Commission

ভোটের সময় চার কেন্দ্রীয় এজেন্সির শীর্ষকর্তা বদলের দাবিতে কমিশনে তৃণমূল, আর্জি জলপাইগুড়ি নিয়েও

নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। তাঁদের দাবি, ইডি, সিবিআই, এনআইএ, আয়কর দফতরের প্রধানদের সরিয়ে দেওয়া হোক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০৩
Share:

নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। — নিজস্ব চিত্র।

ভোটের সময় চার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক। নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে আর্জি জানাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দলে ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ, প্রাক্তন সাংসদ-সহ ১০ জন। তাঁদের দাবি, ইডি, সিবিআই, এনআইএ, আয়কর দফতরের প্রধানদের সরিয়ে দেওয়া হোক। এই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্র নিজের কাজে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ এনেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। গোটা দেশে নির্বাচনী আচরণবিধি জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের আরও আর্জি, ঝড়বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে এখনই নতুন ঘর তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক রাজ্য প্রশাসনকে। কমিশনের দফতরের সামনে এর পর ২৪ ঘণ্টার জন্য ধর্নায় বসেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা।

Advertisement

সোমবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্তা, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, আবীররঞ্জন বিশ্বাস এবং সুদীপ রাহা। সেখান থেকে বেরিয়ে তৃণমূল সাংসদ দোলা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এনআইএর হাতে দুই তৃণমূল কর্মীর গ্রেফতারি প্রসঙ্গ তুলেই তিনি আক্রমণ করেন বিজেপিকে। তাঁদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানোর অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির তিওয়ারি এবং এনআইএর মধ্যে কী ভাব-ভালবাসা হল জানি না। তার ফল, ২০২২ সালের ঘটনায় ২০২৪ সালে ভোটের আগে এনআইএ গ্রেফতার করল। তা-ও রাত সাড়ে তিনটের সময় এসে। মেয়েদের হেনস্থা করল।’’

এই বিষয়ে স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তা-ও জানিয়েছেন দোলা। তাঁর কথায়, ‘‘এনআইএ স্থানীয় পুলিশকে জানিয়েছে ভোর সাড়ে ৫টায়। সকলে জানেন, আইনশৃঙ্খলার বিষয় রাজ্যের অধীনে। নির্বাচনী আচরণবিধি জারি। তবু স্থানীয় থানা তো জানবে! সন্দেশখালির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’’ এর পর দোলা আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রীকে। বলেন, ‘‘মোদীবাবু যদি মনে করেন, সবই জমিদারি, কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁদের, তা হলে ভুল করছেন। আমরা কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চাই, সমান মাঠে খেলার ব্যবস্থা করুক। বিজেপির জমিদারি যেন বন্ধ হয়। দাবি করেছি, এখনই চার সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক। যাতে বিজেপি ওঁদের খেলার যন্ত্র ভাবতে না পারে।’’

Advertisement

কমিশনের কাছে আরও একটি অনুমতি চেয়ে আর্জি জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দোলা জানান, কয়েক মিনিটের টর্নেডোয় সব ধূলিসাৎ হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে ‘২০০০ ঘর’ উড়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রাত ১টায় আর্ত মানুষের পাশে পৌঁছে গিয়েছেন, যেখানে সকলে পরের দিন গিয়েছেন। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আচরণবিধি ভাঙেননি। বলেননি, আমি ঘর করব। মুখ্যমন্ত্রী হয়েও বলেননি। তিনি বলেন, প্রশাসন করবে।’’ এই পরিস্থিতিতে মানবিক কারণেই যাতে নতুন ঘর তৈরির অনুমতি দেয় কমিশন, সেই আর্জিই জানিয়েছে তৃণমূল। দোলা বলেন, ‘‘যে কাজ চলছে, তাতে বাধা নেই। কিন্তু নতুন কাজ শুরু করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশন অনুমতি দিলে তবেই নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। মানবিক কারণে কমিশনকে আর্জি জানিয়েছি। আবার ঝড় হতে পারে। মানুষগুলো যাতে খোলা আকাশের নীচে না থাকেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য রাজ্য যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে, তার জন্য কমিশন অনুমতি দিক।’’

উল্লেখ্য, এর আগেও বার দু’য়েক কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। গত সোমবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে দেখা করে চিঠিও দেয় তৃণমূল। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, “এটি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আজ আমরা আপনাকে লিখছি যে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন বিভাগ এবং সংস্থা সারা দেশ জুড়ে বিরোধী দলগুলির নেতা-কর্মীদের হয়রান করছে।’’ উদাহরণ হিসেবে মহুয়া মৈত্রের কথা লিখেছিল তৃণমূল। তাদের দাবি, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে জেনেবুঝে হয়রান করছে সিবিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement