মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে শহর এবং শহরতলির আবাসনের ভোটের বড় অংশ পেতে উদ্যোগী হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কলকাতা শহরের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শাসকদলের নেতা, কাউন্সিলরেরা যেমন নিয়মিত বহুতলগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ রাখছেন, সে ভাবেই ভোটারদের কাছে পৌঁছে যেতে উদ্যোগী হয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শনিবার ছিল পঞ্চম দফা ভোটের প্রচারের শেষ দিন। ওই দিন হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দক্ষিণ হাওড়া বিধানসভার একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। জানতে চাইলেন তাঁদের মনের কথা। হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচার করতে এসেছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানকার একটি আবাসনে জনসংযোগের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। প্রচার পর্ব শেষের পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে ওই আবাসনের বেশ কয়েক জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন কলকাতার মেয়র।
হাওড়া সদর জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, ফোনে মমতা বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। কোনও সমস্যা হলে অবশ্যই জানাবেন, আমরা সব রকম ভাবে পাশে আছি।’’ কৌশলগত কারণে এই বৈঠকে হাওড়া জেলার সব নেতাকেই হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফিরহাদের সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ হাওড়ার বিধায়ক নন্দিতা চৌধুরী। এ ছাড়াও আবাসনের এই বৈঠকে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন ছাড়াও হাজির ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়, হাওড়া উত্তরের বিধায়ক গৌতম চৌধুরী, বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। বৈঠকে হাজির হাওড়ার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে হাওড়ার সব কেন্দ্রে আমরা জিতলেও লোকসভা নির্বাচনে দু’-একটি কেন্দ্রে বিজেপিকে এগিয়ে যেতে দেখেছি আমরা। সে ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গিয়েছে যে, বহুতল আবাসনের একাংশের ভোট পেয়ে বিজেপি এ ক্ষেত্রে এগিয়ে গিয়েছে। সেই ভোট তৃণমূলের বাক্সে ফেরাতে দলীয় নেতৃত্ব একের পর এক পদক্ষেপ করছেন। সেই পদক্ষেপ অনুযায়ী ববিদা (ফিরহাদ হাকিমের ডাক নাম) আমাদের এলাকার বেশ কিছু অবসানে ঘুরে গিয়েছিলেন। প্রচারের শেষ দিনে দিদির সঙ্গে আবাসনের মানুষের কথা বলিয়ে দিয়ে তাঁদের মন পাওয়ার চেষ্টা করেছেন।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর হাওড়া এবং বালি কেন্দ্রে বড় ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। আবার ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর হাওড়া কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে এক হাজারের কম ভোটে পিছিয়ে ছিলেন বালি বিধানসভা থেকে। তাই এ বার হাওড়ার বহুতল আবাসনের ভোট তৃণমূলের ভোটবাক্সে আনতে মরিয়া প্রয়াস চালিয়েছেন হাওড়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই কাজে তাঁদের প্রয়াসকে উৎসাহ দিতে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ তো বটেই, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও জনসংযোগে অংশ নিয়েছেন বলেই মনে করছেন হাওড়া তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।