পঞ্চায়েত ভবন সাজানো হয়েছে নানা প্রকল্পের নামে। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েতের দেওয়ালে আঁকা লক্ষ্মীর ভান্ডারের সাফল্যের চিত্র-কথা। রং-তুলি দিয়ে লেখা হয়েছে রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের কাহিনিও। লোকসভা ভোটের আগে যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা, বিতর্কও। চিত্রটা গড়বেতা ৩ (চন্দ্রকোনা রোড) ব্লকের অন্তর্গত শঙ্করকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের।
তৃণমূল পরিচালিত শঙ্করকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়কে নীল-সাদা রঙে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। পঞ্চায়েতের প্রশাসনিক ভবনের দেওয়ালে আঁকা-লেখা হয়েছে রাজ্য সরকারের নানাবিধ প্রকল্পের সাফল্য-কথা। পঞ্চায়েত অফিস ঢুকতেই দু’দিকে দু’টি লক্ষ্মীর ভান্ডারের বড় ছবি আঁকা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষকের ছবি এঁকে কৃষকবন্ধু প্রকল্প, ছাত্রীর ছবি এঁকে কন্যাশ্রী প্রকল্প, সাইকেল নিয়ে স্কুল পড়ুয়ার ছবি এঁকে সবুজসাথী প্রকল্প, একটি জন্ম-একটি গাছ স্লোগান লিখে সবুজশ্রী। আবার একই ভাবে খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী প্রভৃতি রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের কথা লিখে পঞ্চায়েতের দেওয়াল ভরানো হয়েছে। পঞ্চায়েতে কাজে আসা অনেকেই দাঁড়িয়ে সে সব পড়ছেন, দেখছেন। অনেকে মোবাইলে এ সবের সঙ্গে নিজস্বীও তুলে রাখছেন। সারবেড়া মৌজায় অবস্থিত এই গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের মূল প্রবেশপথ করা হয়েছে রাস্তার পাশেই। ভবনের অন্দর ও বাইরের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জ্ঞানাঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত জনগণের অফিস। জনগণ নানা প্রকল্পের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে এই অফিসে আসেন। পঞ্চায়েত ভবনে সে সব প্রকল্পের কথা লিখেছি। মানুষও অবগত হচ্ছেন।’’
তবে পঞ্চায়েতের মতো সরকারি দফতরের দেওয়ালে লোকসভা ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের কথা ও ছবি আঁকায় তৃণমূলকে বিঁধেছে গেরুয়া শিবির। পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা বিজেপির স্বদেশ দণ্ডপাট কটাক্ষ করে বলছেন, ‘‘গ্রামের মানুষ জল পাচ্ছেন না, আর পঞ্চায়েত অফিস রং করে অযথা টাকা খরচ করা হচ্ছে। আসলে ওদের (তৃণমূল) পঞ্চায়েত, বলার কিছু নেই, জোর যার মুলুক তার।’’ এ ব্যাপারে বিজেপির চন্দ্রকোনা রোড (শালবনি ২) মণ্ডল সভাপতি অজিতকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি ভবনে এ ভাবে প্রকল্পের প্রচার করা ঠিক নয়। করলে শুধু রাজ্যেরই কেনও, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কথাওলেখা উচিত।’’
এই বিতর্কে কার্যত ‘পাল্টা’ দিয়ে তৃণমূলের ব্লক নেতা তথা পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত দফতরে সরকারি প্রকল্পের কথা লেখা দোষের কিছু নেই, এ নিয়ে বিতর্কতোলা অর্থহীন।’’