শ্রীরামপুরের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রচার জোরকদমে চললেও এখনও আরামবাগের তৃণমূলের নেতাদের একাংশ ‘নিষ্ক্রিয়’। এখনও বেশ কিছু ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা-কর্মীর দেখা মিলছে না প্রচারে। এই অবস্থায় ভোটের লড়াইয়ে বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন দলের ব্লক ও জেলা নেতাদের একাংশ। কারণ, এই লোকসভা কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৪টিই বিজেপির দখলে। এই পরিস্থিতিতে ওই ‘বিক্ষুব্ধ’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’ নেতা-কর্মীদের ভোটের লড়াইয়ে শামিল করতে আসরে নামানো হল দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা শ্রীরামপুরের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে দায়িত্ব পেয়ে বুধবার কল্যাণ পুরশুড়া, খানাকুল এবং আরামবাগ বিধানসভা এলাকায় তিনটি কর্মিবৈঠকও সারলেন। বৈঠক শেষে কল্যাণ বলেন, “দিদি আমাকে কিছু কেন্দ্র দেখতে বলেছেন। সেগুলো দেখছি। তার মধ্যে আরামবাগ একটা।’’ ‘বিক্ষুব্ধ’ বা প্রচারে না থাকা কর্মীদের নিয়ে কোনও বার্তা দিলেন কি না, সেই প্রশ্নে কল্যাণ বলেন, “কেউই বসে থাকবেন না। সবাই মিলে একজোট হয়ে নির্বাচন করতে হবে। বিজেপিকে উৎখাত করতে প্রতিজ্ঞা করতে হবে। এটাই শেষ কথা।”
এ দিন সকালে পুরশুড়া বিধানসভা এলাকার সামন্তরোড মোড় সংলগ্ন একটি প্রেক্ষাগৃহে কর্মী-বৈঠক সেরে দুপুরে খানাকুলে রামনগরের একটি প্রেক্ষাগৃহে কর্মিবৈঠক করেন কল্যাণ। শেষে, সন্ধ্যায় কর্মী-বৈঠক ছিল আরামবাগের রবীন্দ্রভবনে। তিনটি ক্ষেত্রেই কল্যাণ দল থেকে মুখ ফেরানোদের দলে শামিল করার বার্তা দেন এবং ‘নিষ্ক্রিয়’ কর্মীদেরও হুঁশিয়ারি দেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
বৈঠকে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন কল্যাণ। তাঁর হুঁশিয়ারি, “বুথ, অঞ্চল এবং ব্লক স্তরে যে যেখানে আছেন, সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। এর বাইরে কোনও কথা নেই। কে দলের কাজ করলেন, কে করলেন না, সেই সব হিসাব আমার কাছে থাকবে। যিনি কাজ করবেন, থাকবেন। যিনি করবেন না, থাকবেন না।”
আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র জয়ের লক্ষ্যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাওয়া এই দায়িত্ব এবং কর্মসূচিকে গুরুত্ব দেননি বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ। তাঁর দাবি, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন, ওঁদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে পড়ে থাকলেও কিছু হবে না। বিজেপি জিতবে।”
এ দিন তৃণমূল প্রার্থীর প্রচার কর্মসূচি না থাকলেও বিজেপি প্রার্থী অরূপকান্তি দিগার বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র-সহ পুরশুড়ায় প্রচার সারেন। চিলাডাঙিতে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে কর্মী-বৈঠক সেরে গ্রামের ঘরে ঘরে প্রচার চলে। বিকালে আরামবাগের দৌলতপুর এবং সন্ধ্যায় শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরনো বাজারে পথসভা হয়।