Lok Sabha Election 2024

নেতাদের ভোটের তুরুপ, থমকাচ্ছে আবাসের কাজও 

১০০ দিনের কাজের (এমজিএনআরইজিএ) প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দড়ি টানাটানির জাঁতাকলে পড়েছে লক্ষ লক্ষ পরিবার। ‘বিকল্প’ কর্মসংস্থান তেমন নেই। কতটা ধাক্কা খাচ্ছে স্থানীয় অর্থনীতি?

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নদিয়া জেলার হাজার হাজার শ্রমিক এই প্রকল্পে কাজ করেও টাকা পাননি। বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসছেন। শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে দেব রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেবে বলেও তিনি ঘোষণা করেছেন।

Advertisement

তবে জবকার্ড হোল্ডারদের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, বকেয়া টাকা না হয় মিলল, কাজের কী হবে? কবে আবার নতুন করে কাজ পাবেন? এই প্রশ্নের সামনে কার্যত অসহায় জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কারণ মুখ্যমন্ত্রী যে ‘বিকল্প’ কাজ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাতে কিছু মানুষ কিছু দিন কাজ পেয়েছিলেন, বেশির ভাগ তা-ও পাননি।

রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নদিয়ায় প্রায় দু’বছর ধরে কাজ পাচ্ছেন না প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিক। এঁদের অনেকেই নিয়মিত কাজ করতেন। জেলার কয়েক লক্ষ পরিবারের অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল এই প্রকল্প। অনেক পরিযায়ী শ্রমিকও এই কাজের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অনেকের মতেই, ১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকায় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। কয়েক লক্ষ পরিবারের আয় এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। বিকল্প কাজের সন্ধানে তাই পরিবারের পুরুষেরা পাড়ি দিচ্ছেন অন্য রাজ্যে বা অন্য দেশে। এতে জেলার অর্থনীতিতেও বড়সড় ধাক্কা লেগেছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

এই পরিস্থিতিতে জেলার দিনমজুর থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও চাইছেন, দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে টানাপড়েন বন্ধ করে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ দেওয়া শুরু করুক। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে সে সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এক কর্তার কথায়, “এই প্রকল্প যে ভাবে রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে, তাতে নির্বাচনের আগে সমস্যার সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং এটাকে জিইয়ে রাখাই হবে।”

শুধু এ-ই নয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন আবাস যোজনার ঘর তৈরির সময়ে ঘরের মালিক বা উপভোক্তাকে কাজের জন্য ৯০ দিনের টাকা দেওয়া হত। তিনি নিজে কাজ করতে পারতেন অথবা অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারতেন। ফলে আবাস যোজনার প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু মানুষকে কাজ দেওয়া সম্ভব হত। এ বার সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। রাজ্য সরকার যে বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করছে সেটাই এখন একমাত্র সম্বল। যদিও সেই ‘বিকল্প’ পরিকল্পনাও ১০০ দিনের কাজের পরিপূরক হতে পারে কি না, তা নিয়ে সব মহলেই সন্দেহ রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে জড়িত লক্ষ লক্ষ পরিবারের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। যে সমস্ত ব্যবসায়ী বা ব্যক্তি এই প্রকল্পের কাজে কোটি কোটি টাকার সমগ্রী সরবরাহ করেছিলেন, তাঁদের কী হবে, সেই প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। (চলবে)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement