পঞ্চবটীতে ভোট প্রচার খলিলুর রহমানের। নিজস্ব চিত্র।
জোরদার প্রচারে নামলেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। পঞ্চবটীতে এ দিন তিনি যান। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, গত পাঁচ বছরে দিল্লিতে লোকসভায় একাধিক দাবি উত্থাপন করলেও বাস্তবে সাংসদ খলিলুরের একটি ছাড়া কোনও দাবিকেই মান্যতা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
১৭তম লোকসভায় ৫ বছরে মাত্র ১৮টি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন এবং স্থানীয় সমস্যা নিয়ে ১২টি প্রশ্ন করেছেন সংসদে খলিলুর। গঙ্গা ভাঙন, ধুলিয়ান ও উমরপুরে দু’টি উড়ালপুল নির্মাণ, পিএফ অফিস ফের জঙ্গিপুরে ফিরিয়ে আনা, জঙ্গিপুরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় স্থাপন, তারাপুরের কেন্দ্রীয় বিড়ি শ্রমিক হাসপাতালের উন্নয়ন, ইএসআই হাসপাতাল তৈরি, মুর্শিদাবাদে পর্যটনের উন্নয়ন, গঙ্গার ড্রেজিং ইত্যাদি নিয়ে একাধিক বার প্রশ্ন তুলেছেন গত পাঁচ বছরে খলিলুর রহমান। কিন্তু ১২ নম্বর (পুরনো ৩৪ নম্বর) চার লেনের জাতীয় সড়কে উমরপুর ও ধুলিয়ান ডাকবাংলোয় দু’টি উড়ালপুল নির্মাণ ছাড়া অন্যান্য সব দাবিকেই কার্যত নস্যাৎ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার নানা অছিলায়।
ইতিমধ্যেই জঙ্গিপুর লোকসভা এলাকার মধ্যে দিয়ে প্রায় ৮০ কিলোমিটার ৪ লেনের জাতীয় সড়ক গড়ে উঠেছে বহু আগেই। গত বছর ৮ অগস্ট খলিলুর রহমান দাবি তোলেন, রঘুনাথগঞ্জ ও শমসেরগঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কের উমরপুর ও ডাকবাংলো এলাকা ঝাড়খণ্ড, বীরভূম ও উত্তরবঙ্গের প্রবেশ পথ হওয়ায় যানজটে অচলাবস্থার কারণে থমকে যায় পরিবহণ।ফলে উমরপুর ও ডাকবাংলোয় জাতীয় সড়কের উপর দু’টি ফ্লাইওভার নির্মাণ হলে যান জট কমবে, কলকাতা ও শিলিগুড়ির মধ্যে যাতায়াতের সময় প্রায় ২ ঘণ্টা কমে যাবে। স্বল্প ও মাঝারি শিল্প জাতীয় ব্যবসার প্রসার ঘটবে যাতে মুর্শিদাবাদের অর্থনীতিও লাভবান হবে। অন্তত দু’দু’বার বিষয়টি তিনি উত্থাপন করেছেন লোকসভায়।
তার ভিত্তিতে জাতীয় সড়কে দু’টি ফ্লাইওভার নির্মাণকেই ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সড়ক উন্নয়ন মন্ত্রক। দু’টি এলাকাতেই সমীক্ষা করে ১৯২.৯৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছেন এর জন্য। এ নিয়ে মুর্শিদাবাদের জেলা শাসকের কাছে ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের প্রকল্প আধিকারিক অজয় পি গাদেকর।
গঙ্গা ভাঙন রোধে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি মিলে একটি কমিটি তৈরি করে কারিগরি পর্যবেক্ষণ করার কথা জানিয়ে স্বীকার করা হয়েছে গত ৫ বছরে ৭৩০ হেক্টর নদী পাড়ের জমি ধসেছে। ইএস আই হাসপাতাল তৈরি, নিমতিতা ও তারাপুর হাসপাতাল বা পিএফ অফিস ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও বাধার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংসদকে। মুর্শিদাবাদে পর্যটনের উন্নয়নের কোনও প্রস্তাব রাজ্য সরকার পাঠায়নি তা জানিয়ে খলিলুরের সে প্রস্তাবও বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নাকচ করে দেওয়া হয়েছে মুর্শিদাবাদে বিমানবন্দর স্থাপনে সাংসদের আর্জিও।