Lok Sabha Election 2024

বাঁকুড়ায় জয় মিললেও শহরে কেন বেশি ভোট পেল বিজেপি? অন্তর্ঘাত? ময়নাতদন্তে তৃণমূল

বাঁকুড়া বিধানসভায় বার বার রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। কিন্তু শহরে একাধিপত্য ছিল তৃণমূলের। সেখানে কেন হার হল তৃণমূলের, পর্যালোচনা করছে দল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৪ ১৯:১৫
Share:

(বাঁ দিকে) বাঁকুড়া কেন্দ্রের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। পরাজিত বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের মতো ওজনদার বিজেপি প্রার্থীর কাছ থেকে বাঁকুড়া লোকসভা আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তী। ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে ওই লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে পাঁচটিতেই এগিয়ে তৃণমূল। কিন্তু, জয়ের পরেও ঘাসফুল শিবিরে গলার কাঁটা হয়ে রইল বাঁকুড়া পুর এলাকার ফল। এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। রাজ্য জুড়ে সবুজ ঝড়ের মাঝেও বাঁকুড়া শহরে কেন ওই দাপট দেখা গেল না, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় কর্মীদের একাংশের অন্তর্ঘাত না কি অন্য কোনও কারণ, তা খুঁজতে মরিয়া ঘাসফুল শিবির।

Advertisement

বাঁকুড়া পুরসভা এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ এলাকাকে নিয়ে তৈরি বাঁকুড়া বিধানসভায় বার বার রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। ২০১১ সালের নির্বাচনে ওই বিধানসভায় জয়ী হয় তৃণমূল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ওই কেন্দ্রের দখল নেয় বাম-কংগ্রেস জোট। আবার ২০২১ সালে বাঁকুড়া বিধানসভা ছিনিয়ে নেয় পদ্মশিবির। যদিও বিধানসভার এই বদলের ছবি বাঁকুড়া পুরসভাতে পড়েনি। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পুরসভার রাশ রয়েছে রাজ্যের শাসকদলের হাতেই। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পরেও সেই পুর এলাকাতেই পিছিয়ে তৃণমূল। ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিতেই এগিয়ে আছে বিজেপি।

বাঁকুড়া শহরকেন্দ্রিক বাঁকুড়া বিধানসভায় তৃণমূলের চেয়ে ১৬,৩১২টি ভোট বেশি পেয়েছে বিজেপি। সারা রাজ্যে সবুজ ঝড়ের মাঝে বাঁকুড়া পুর এলাকায় এই হাল কেন, তারই ময়নাতদন্ত শুরু করেছে তৃণমূল। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার বলেন, ‘‘শহরে আমাদের ফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি না, কেন এমনটা হল!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গত আড়াই বছরে পুরসভা এলাকার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে পানীয় জল সরবরাহ এবং অন্যান্য পরিষেবায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তার পরেও কেন এমন ফল হল, তা অবশ্যই পর্যালোচনা করে দেখছি।’’ অলকা জানান, কোথাও তাঁদের দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খারাপ ফলের পিছনে কি অন্তর্ঘাত রয়েছে? কৌশলে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে পুরপ্রধানের জবাব, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তেমনটা হয়ে থাকলে আমরা তা দলের মধ্যেই আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।’’

Advertisement

অন্য দিকে, বাঁকুড়া লোকসভা হাতছাড়া হলেও শহর এলাকায় বিজেপির ভাল ফলের কৃতিত্ব কেন্দ্রের মোদী সরকারকে দিচ্ছে পদ্মশিবির। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডলের যুক্তি, ‘‘মোদী সরকারের আমলে দেশের সুরক্ষার মজবুতি, অর্থনৈতিক প্রগতি এবং দৃঢ় বিদেশনীতি শহুরে শিক্ষিত ভোটারকে বিজেপির প্রতি আকৃষ্ট করেছে। বাঁকুড়া শহরের ফলাফলে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।’’ যদিও হার নিয়ে তাঁরাও আলোচনায় বসছেন বলে জানান ওই বিজেপি নেতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement