—প্রতীকী চিত্র।
উনিশের লোকসভা ভোটে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বা একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল জয়লাভ করলেও দুটি ক্ষেত্রেই সিউড়ি পুরসভা এলাকায় ভোট প্রাপ্তির নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সেই ব্যবধান মুছে ফেলতে তৎপর তৃণমূল। দলীয় ভাবে সিউড়ি পুরসভা এলাকায় দশ হাজার ভোটে লিডের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যদিও শহরের নেতাদের দাবি বিজেপির সঙ্গে ব্যবধান মুছে ফেলে হাজার চারেক ভোটে এগিয়ে যেতে পারলেই সেটা বড় প্রাপ্তি হিসাবে ধরা হবে। যদিও বিজেপির দাবি, সিউড়ি শহরে আগের দু’টি নির্বাচনের তুলনায় আরও কয়েক গুণ বেশি ভোটে পিছিয়ে থাকবে তৃণমূল।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় সিউড়ি পুরসভা এলাকায় ৫,৬৩১ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সেই ব্যবধান অনেকটাই কমে যায়। সে বার তৃণমূল প্রার্থী বিকাশ রায়চৌধুরী সিউড়ি পুরসভা এলাকায় ৭৫৮ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। শহরের ১৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতেই পিছিয়ে ছিলেন বিকাশ। তবে ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনে সিউড়ির ২১টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয় তৃণমূল। যদিও সে বার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র চারটি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছিল। বাকিগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই যেতে তৃণমূল। এ বার পুরসভার এলাকা বৃদ্ধি হয়েছে। গত লোকসভায় শহরে যেখানে ৬৬টি বুথে ভোট হয়েছিল, এবার সেখানে বুথের সংখ্যা ৮৪টি। বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায় এ বারও তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁকে জেতানোর ব্যাপারে আশাবাদী নেতারাও।
তৃণমূলের সিউড়ি শহর সভাপতি আব্দুল সফি বলেন, “বিদায়ী সাংসদ শতাব্দী রায় যে ভাবে সিউড়ি শহর এলাকার উন্নতিতে অংশগ্রহণ করেছেন, তাতে তাঁর ভোট না পাওয়ার কোনও কারণই নেই। পাশাপাশি, সিউড়ি পুরসভাও একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে৷ রাস্তা, নিকাশি, আলো নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের যে সমস্যা ছিল, তা অনেকটাই মিটে গিয়েছে। শহরের জল সমস্যা মেটাতে দুটো বড় বড় প্রকল্পও আসতে চলেছে। সিউড়ি উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়েও শহরকে আনন্দ দিয়েছে পুরসভা। তার প্রভাব নিশ্চয়ই পড়বে আসন্ন নির্বাচনে। আমরা সিউড়ি শহর থেকে দশ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে থাকার ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী।”
যদিও তৃণমূলের দাবিকে পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপি। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, “সিউড়ি শহরের মানুষ তৃণমূলকে ইতিমধ্যেই প্রত্যাখ্যান করেছে। গত বিধানসভা এবং লোকসভার ফলাফলেই তা প্রমাণিত। ২০২২ সালে পুরসভা ভোট হতে দেয়নি। তৃণমূল প্রার্থীরা নির্বাচিত নয় মনোনীত হয়েছিলেন। সেখানে মানুষের পছন্দের বহিঃপ্রকাশ হয়নি। শহরের জল সমস্যা ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানে পুরসভার কোনও সদর্থক ভূমিকা নেই। আসন্ন নির্বাচনে সিউড়ির মানুষ আরও এক বার তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যান করবে এবং রেকর্ড ব্যবধানে সিউড়ি শহর থেকে এগিয়ে থাকবেন বিজেপি প্রার্থী।”