ভোটারদের ভোটদানের তথ্য প্রকাশে বিলম্ব নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র। ২০১৯ সালে দায়ের করা সেই মামলা শুনানি হবে ষষ্ঠ দফা লোকসভা ভোটের ঠিক এক দিন আগে। মহুয়া নিজেই এই খবর জানিয়েছেন। আগামী ২৪ মে, শুক্রবার মামলাটির শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এমনকি, বিজেপি নেতারা ভোটের প্রচারে ঘৃণাভাষণ কিংবা খারাপ মন্তব্য করলে কমিশন সে ব্যাপারে যথেষ্ট পদক্ষেপ করে না বলে অভিযোগ। এই তর্কবিতর্কের মধ্যে কয়েক দিন আগেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এপিডিআর) শীর্ষ আদালতের দরজায় কড়া নেড়েছিল। তাদের আর্জি, ভোটগ্রহণের পরপরই ভোটের পরিসংখ্যান এবং তথ্য যাতে কমিশন দেয়, সে ব্যাপারে নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী দাবি করেছিলেন, তাঁর কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কী ভাবে ভোটারদের সংখ্যা পেতে তিনি সমর্থ হয়েছেন।
সোমবার পঞ্চম দফা ভোটের দিন নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) মহুয়া লেখেন, ‘‘আমি ডব্লিউপিসি ১৩৮৯/২০১৯-এর মাধ্যমে ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টে মূল পিটিশনকারী ছিলাম। এবং নির্বাচন কমিশনকে ভোট দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৭সি ফর্মের সমস্ত ভোটারের তথ্য প্রকাশ করতে বলেছিলাম। মামলাটি ২৪ মে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’’ মহুয়ার আবেদন ছিল, যত ভোট পড়েছে, ভোটগণনার ফল এবং চূড়ান্ত ফলাফলের তথ্য যেন সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে জনসমক্ষে আনে কমিশন, এ নিয়ে তাদের নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত।
এপিডিআর তাদের হলফনামায় জানায়, প্রথম দফা ভোটের ১১ দিন পর ‘ভোটার টার্নআউট’-এর তথ্য দিয়েছিল কমিশন। দ্বিতীয় দফা ভোটের চার দিন পর ওই তথ্য দেওয়া হয়েছিল। অন্য দিকে, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন আত্মপক্ষ সমর্থন করে জানায় ভোটের দিন আনুমানিক ডেটা রিপোর্ট করার ক্ষেত্রে সব সময় একটি সময়ের ব্যবধান থাকে। কমিশন এ-ও জানায়, ১৭সি ফর্মে নথিভুক্ত ভোটের সংখ্যার সঙ্গে কোনও বিচ্যুতির সুযোগ নেই। কারণ, ওই ফর্মের একটি স্বাক্ষরিত প্রতিলিপি ভোটগ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রতিটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই দেখতে পান।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে এবং দফতরে সিবিআই তল্লাশির পর নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি লিখেছিলেন মহুয়া। সেই চিঠিতে মহুয়া বলেছিলেন, কমিশনের উচিত ভোটের সময় কেন্দ্রীয় এজেন্সি কী ভাবে কাজ করবে, তার একটি নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হোক। কারণ, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শাসকদল বিজেপি যে ভাবে এদের ব্যবহার করছে তাতে ভোটের ময়দানে শাসক এবং বিরোধী দলের সমতা রক্ষা হচ্ছে না।