ডেরেক ও’ব্রায়েন। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে ভোট চাইল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের নিশানা করে নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির দফতর হিসেবে কাজ করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। যদিও, এই দাবি নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা বিঁধেছে বিজেপি-সহ অন্য বিরোধীরাও। তৃণমূলকে পঞ্চায়েত ভোটের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে তারা।
কমিশন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে অপসারণ করার পরে এ দিন আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়েছে তৃণমূল। এক্স হ্যান্ড্লে মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, “নির্বাচিত সরকারের আধিকারিকদের বদলি করে দেওয়া হচ্ছে।” তাঁর কটাক্ষ, “কমিশন না কি হিজ মাস্টার্স ভয়েস!” এর পরেই ডেরেকের দাবি, “স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতার স্বার্থে আমরা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন চাই।” প্রসঙ্গত, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সরব তৃণমূল। রাজনৈতিক হিংসার কারণে রাজ্যে বেশি দফায় ভোটের সিদ্ধান্ত হলেও তা নিয়ে বারবারই তৃণমূলের তোপের মুখে পড়েছে কমিশন। লোকসভা ভোটের আগেও কমিশনের ভূমিকায় অখুশি তৃণমূলের ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ সেই সূত্রেই কি না, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে।
যদিও ডেরেকের এই দাবি নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা বিঁধেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি ডেরেক ও’ব্রায়েনকে বলব, এত ঝামেলার দরকার নেই। বাজার থেকে একটা মোটা গাবদা খাতা মুখ্যমন্ত্রীকে দিতে। উনি ওখানে নতুন সংবিধান রচনা করে দিন! যেটা লিখবেন, সেটাই সংবিধান হবে ভারতবর্ষের। ডেরেকবাবু ওটার সংশোধন করবেন। ইংরেজিতে অনুবাদ করেবেন।” সংবিধান ভোট করানোর দায়িত্ব কমিশনকে দিয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ডিজি-কে অপসারণের সিদ্ধান্তও সমর্থন করেছেন সুকান্ত। অতীতের নানা দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয় তুলে তিনি বলেছেন, “যাঁর কাছে লালার, সারদার লাল ডায়েরি ছিল, পুলিশ অফিসার হয়ে পলাতক ছিলেন, তাঁকে সরানো হবে না তো, কাকে হাটানো হবে!”
তৃণমূলের এমন দাবি নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেসও। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “কমিশন ঠিক মতো কাজ না করলে কোর্টে যাওয়া উচিত।” সেই সঙ্গেই তিনি পঞ্চায়েত ভোটের ‘অনিয়মের’ প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। বলেছেন, “পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের নির্বাচন কমিশন জয়ীকে হারিয়েছে, পরাজিতকে জিতিয়েছে। জবরদস্তি করেছে। আদালতের নির্দেশকে অমান্য করেছে। তৃণমূল তখন নির্বাচন কমিশনকে পুতুল করে নিজেদের পকেটে পুরে রেখেছিল।” পাশাপাশি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, “শুধু ভোট কেন? সন্দেশখালি, এই বাংলায় চুরি-বাটপাড়ি, বিরোধী দলের উপরে সন্ত্রাসের বিষয়ে তদন্ত, সব হোক সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে।”