—প্রতীকী চিত্র।
জিনিসপত্রের দামকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ধারাবাহিক পদক্ষেপ চালিয়ে গিয়েছে কেন্দ্র এবং তার ফলেই মূল্যবৃদ্ধির হার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার (২%-৬%) মধ্যে চলে এসেছে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যদিও মঙ্গলবারই ঢাকঢোল পিটিয়ে ভর্তুকির ‘ভারত চাল’ বাজারে এনেছে মোদী সরকার। ফলে প্রশ্ন উঠছে জিনিসপত্রের দাম যদি নাগালেই চলে আসে তা হলে নির্বাচনের আগে ভর্তুকির চাল বিক্রি কাদের জন্য? এর আগে বিভিন্ন শহরে ভারত ব্র্যান্ডের আটা, ডাল, তেল, পেঁয়াজ এবং চিনি বিক্রি চালু করেছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে যে সমস্ত বিষয় মোদী সরকারকে চিন্তায় রেখেছে তার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে খাদ্যপণ্যের আগুন দাম। আদতে তার ছেঁকা থেকে সাধারণ মানুষকে কিছুটা রেহাই দিতেই ‘ভারত চাল’-এর উদ্যোগ। ভর্তুকি দিয়ে যার দাম কেজি প্রতি ২৯ টাকা। এ দিন এই চাল বিক্রির সূচনা করেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও ক্রেতা বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এর জন্য দিল্লিতে ১০০টি চলমান ভ্যানের উদ্বোধন করেন তিনি। প্রতি কেজিতে ৫% ভাঙা চাল থাকবে। পাওয়া যাবে ৫ এবং ১০ কেজির মোড়কে। দুই সরকারি সমবায় নাফেড ও এনসিসিএফ এবং খুচরো বিক্রয় কেন্দ্র ‘কেন্দ্রীয় ভান্ডার’কে মোট ৫ লক্ষ টন চাল দেবে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই)। এর আগে ২৭.৫০ টাকা কেজি দরে ভারত আটা এবং ৬০ টাকা কেজির ভারত চানা বিক্রি করা শুরু করেছে কেন্দ্র।
এ দিন রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, মূলত স্বল্পমেয়াদি পচনশীল পণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার জন্যই মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়ছিল। সংশ্লিষ্ট কমিটি নিয়মিত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে। এখন বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদিও অনেকের মতে, বাস্তব পরিস্থিতি এখনও বেশ কঠিন। পশ্চিমবঙ্গ ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলের বক্তব্য, খাদ্যপণ্য-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির হার এখনও অনেক উঁচুতে। তাঁর কথায়, ‘‘শীতে আনাজের দাম কম থাকে। কিন্তু এখনও শিয়ালদহে বেগুন এবং কড়াইশুঁটির কেজি ৪০ টাকা। এখন ফুলকপি বিক্রি হওয়ার কথা ১৫ টাকায়। তা এখন ২৫ টাকায় বিকোচ্ছে। পেট্রল এবং সারের দাম কমেনি। তাই আনাজের দাম কমার আশা করা অর্থহীন।’’
এ দিকে রোজগার বৃদ্ধির দাবির প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরি বলেছেন, ২০২৩-২৪ হিসাববর্ষে দেশে বছরে ১ কোটি টাকা আয় করা মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২.১৬ লক্ষ হয়েছে। ২০২২-২৩ সালে যা ১.৮৭ লক্ষ ছিল। এ ক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠেছে, ঠিক কোন শ্রেণির আয় বৃদ্ধির কথা বললেন মন্ত্রী? বিশেষ করে যখন খুচরো বিপণিতে বিক্রিবাটায় ভাটার টান স্পষ্ট।