—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা ভোটের জন্য এখনও আসন সমঝোতার বিষয়ে সরকারি কোনও ঘোষণা করেনি বাম-কংগ্রেস। রফা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে, এমনই জানা গিয়েছে দু’পক্ষ সূত্রে। এরই মধ্যে রাজ্যে ১৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। তার মধ্যে আসানসোল কেন্দ্র প্রার্থী করা হয়েছে জামুড়িয়ার দু’বারের প্রাক্তন বিধায়ক জাহানারা খানকে। সিপিএমের এই প্রার্থীকে ঘিরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস শিবির। তাদের দাবি, উচ্চ নেতৃত্বের তরফে বার্তা পেলেই ভোটের ময়দানে জাহানারার হয়ে নামা হবে।
লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল, বিজেপি ও বামফ্রন্ট। তবে কিছুটা হাত গুটিয়ে থাকা পরিস্থিতি কংগ্রেসে। জেলা নেতৃত্বের দাবি, এখনও সরকারি ঘোষণা না হলেও, আসন সমঝোতা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মাঝে সিপিএম প্রার্থীকে নিয়ে উচ্ছ্বাস চেপে রাখছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর দাবি, তাঁরা অনেক আগেই সিপিএম নেতৃত্বের কাছে জাহানারাকে প্রার্থী করার অনুরোধ রেখেছিলেন। কারণ, রাজ্যে ২০১১ সালে ক্ষমতা পরিবর্তনের সময়ে তো বটেই, তার পরের বারও জামুড়িয়া থেকে বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন জাহানারা।
দেবেশের দাবি, ‘‘মাটির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে জাহানারার। বাংলাভাষী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁর প্রভাব রয়েছে। তাই জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, বারাবনি, পাণ্ডবেশ্বরের বিপুল সংখ্যক মানুষের ভোট নিজের পক্ষে এনে বিপক্ষের ভোটে ধস নামাতে পারবেন জাহানারা। তাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো তৃণমূল ও বিজেপিকে জব্দ করা যাবে।’’ তাঁর এই যুক্তিকে সমর্থন করেন কংগ্রেসের আসানসোল দক্ষিণ ব্লক সভাপতি শাহ আলম খান। তিনি বলেন, ‘‘আসন সমঝোতা হবে, আমরা নিশ্চিত। জাহানারার মতো এক জন দক্ষ প্রার্থীকে জেতাতে আমরাও তৈরি। উচ্চ নেতৃত্ব বার্তা পাঠালেই কাজ শুরু হবে।’’ শাহ আলমের দাবি, জাহানারার জনপ্রিয়তা রয়েছে আসানসোল রেলপাড়, কুলটির হিন্দিভাষী বহু বাসিন্দার মধ্যেও।
আসন সমঝোতা নিয়ে নেতৃত্বের বার্তার অপেক্ষায় রয়েছে জেলা সিপিএমও। দল আসানসোলে প্রার্থী দিলেও, বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনটি এখনও ফাঁকা রেখেছে। দলের একাংশ মনে করছেন, সমঝোতা হলে এই আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে সেখানে সিপিএমের ভূমিকা কী হবে? সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী শীর্ষ নেতৃত্ব বসে ঠিক করবেন। তবে যদি সমঝোতা হয় এবং আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়া হয়, সেক্ষেত্রে দলের নির্দেশ মেনে আমরাও সর্বশক্তি নিয়ে ঘোষিত প্রার্থীর জন্য ঝাঁপাব।’’
এরই মধ্যে, ‘বহিরাগত’ হিন্দিভাষী প্রার্থীদের ভোট না দেওয়ার আওয়াজ তুলে স্থানীয় বাঙালি প্রার্থী হিসেবে জাহানারাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ‘বাংলা পক্ষ’ সংগঠন। সংগঠনের জেলা সম্পাদক অক্ষয় রায়ের দাবি, ‘‘যাঁরা এলাকার ভাষা, সংস্কৃতি জানেন না। তাঁদের ভোট না দিয়ে স্থানীয় প্রার্থী জাহানারাকে জেতানোর আহ্বান জানিয়েছি।’’