Lok Sabha Election 2024

দ্বিতীয় দফাতেও কম ভোট, চিন্তায় বিজেপি

প্রথম দু’টি দফায় দেশের মোট আসনের প্রায় ৩৫ শতাংশ আসনে ভোট হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ১৭টি আসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৭
Share:

—প্রতীকী ছবি।

গরমের পারদ যত চড়ছে তত কমছে ভোটের হার। প্রথম পর্বেই ভোট কম পড়েছিল। আর গত কাল দ্বিতীয় পর্বে তো প্রথম পর্বের চেয়েও আট শতাংশ ভোট কম পড়েছে। যাতে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

প্রথম দু’টি দফায় দেশের মোট আসনের প্রায় ৩৫ শতাংশ আসনে ভোট হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ১৭টি আসন। এলাকাটি জাঠ ও মুসলিম অধ্যুষিত হওয়া সত্ত্বেও গত বার ১৭টির মধ্যে দশটি আসন জিতে নিতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। যে কারণে সার্বিক ভাবে উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করে দল। বিজেপি নেতৃত্ব খুব ভাল করেই জানেন ক্ষমতা ধরে রাখতে গেলে উত্তরপ্রদেশের আশিটি আসনের মধ্যে অন্তত সত্তরটিতে জিততে হবে দলকে। কিন্তু প্রথম দু’টি পর্বে যে ভাবে যাদব ও সংখ্যালঘু সমাজ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছে, তুলনায় গেরুয়া সমর্থকদের সে ভাবে খুঁজে না পাওয়ায় অশনি সঙ্কেত দেখছেন বিজেপি নেতারা। বিশেষত রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজ যে ভাবে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়েছে তা প্রশমিত হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

রাজপুতদের পাশে থাকার বার্তা দিতে রাজনাথ সিংহের ছেলে পঙ্কজ সিংহকে বিক্ষোভকারীদের কাছে পাঠিয়েছিল দল। কিন্তু তাতেও বিশেষ যে লাভ হয়নি তা গত কালের ভোটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছে দল। উত্তরপ্রদেশে এখন পাঁচ দফায় ভোট বাকি রয়েছে। রাজ্যের সবক’টি আসনে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার ডাক দিয়েছে রাজপুত সমাজ। দ্রুত রাজপুতদের ওই ক্ষোভ সামলাতে না পারলে দলকে যে সেই মাসুল ভোটের বাক্সে গুণতে হবে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সমস্যা হল কেবল উত্তরপ্রদেশেই নয়, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, কার্যত গো-বলয়ের সব রাজ্যে বিজেপির উপরে ক্ষুব্ধ রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজ। যাদের পাশে টানাই আগামী দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের।

Advertisement

প্রথম দফা নির্বাচনে ভোটের হার কম দেখে আশঙ্কায় ভুগছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। দ্বিতীয় দফার পরে রীতিমতো অস্বস্তিতে কেন্দ্রের শাসক দল। প্রাথমিক ভাবে দল মনে করছে, দলের তৃণমূল স্তরের নেতৃত্বের একাংশ কাজ করছেন না। পাশাপাশি ভোটারদের উদাসীনতা এ বারের নির্বাচনে চোখে পড়ার মতো। চলতি নির্বাচনে মোদী ঝড় না থাকায় আমজনতা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিতে বেরোচ্ছেন না বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির। সে ক্ষেত্রে আগামী পর্বগুলিতে গেরুয়া সমর্থকদের কী ভাবে ভোটের লাইনে টেনে আনা যায় সেই সমাধান সূত্র খুঁজে বার করাই এখন প্রধান লক্ষ্য বিজেপির।

বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বিশ্লেষণ, গত কালের দিনটি গো-বলয়ের মানুষের কাছে শুভ দিন ছিল। বিবাহের দিন থাকায় বহু পরিবার ভোট দিতে ঘর থেকে বেরোয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই ভোটের হার কমেছে।

প্রথম পর্বের ভোটের আগে সেই অর্থে ভোটের প্রচারে হিন্দু-মুসলিম প্রসঙ্গ উঠতে দেখা যায়নি। কিন্তু প্রথম দফায় ভোটের হার দেখে দ্বিতীয় দফার প্রচারে তীব্র মেরুকরণের পথে হাঁটেন নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দলের নেতারা। কিন্তু তাতেও যে বিশেষ লাভ হয়েছে এমনটি অন্তত দ্বিতীয় পর্বের ভোটের পরে মনে করছে না দল। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে মেরুকরণের রাজনীতিই প্রাধান্য পাবে না কি মানুষকে পাশে নতুন কোনও প্রচারের পথে হাঁটবে বিজেপি সেটাই এখন দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement