(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (ডান দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল নিয়ে শোরগোল রাজ্যে। সোমবারের কলকাতা হাই কোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই ‘দায়ী’ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার থেকে শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁদের প্রশ্ন করুন। প্রয়োজনে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘেরাও করুন।’’ পাশাপাশি, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু।
সোমবার হাই কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে। আদালতের রায়ে চাকরি খুইয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। আদালতের রায়কে ‘একতরফা’ বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের নির্বাচনী সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘যদি বলতেন, এখানে অসুবিধা রয়েছে, এটা তোমার ভুল হয়েছে, তোমরা সংশোধন করো, আমরা করে দিতাম।’’ তিনি দাবি করেছেন, যদি কোনও ভুল থেকে তা তাঁর অজান্তে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ভুল তো যে কোনও কেউ করে দিতে পারে। সবটা কি আমি করি? আমি করি না। শিক্ষা দফতর আলাদা। এসএসসি আলাদা। প্রাথমিক বোর্ড, মাধ্যমিক বোর্ড, কলেজ কমিশন আলাদা রয়েছে। এগুলি (নিয়োগ) তারা দেখে।’’
অন্য দিকে, এসএসসি মামলায় ওই রায়ের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘প্রতারক’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাট লোকসভার বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। এ নিয়ে মমতা সরকারকে একহাত নিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অধীরও। আর শুভেন্দুর দাবি, যা ঘটেছে, তার দায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরই।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ির সফদর হাসমিচক থেকে হিলকার্ট রোড ধরে মাল্লাগুড়ি পর্যন্ত দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী রাজুর সমর্থনে সভা করেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। ওই র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সম্পাদক রোশন গিরি-সহ মোর্চার কর্মীরা।
মিছিল থেকেই অভিষেককে আক্রমণ করে বিজেপি প্রর্থী রাজু তিনি বলেন, ‘‘শুধুমাত্র ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছেন উনি। দুটো কারণেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে আসেন। এক, ভোট ব্যাঙ্কের জন্য। দ্বিতীয়, টাকা ওঠানোর জন্য।’’ শুভেন্দু বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫টি চা-বাগান চালাচ্ছেন উত্তরবঙ্গে। তাঁর নিজের চা-বাগান রয়েছে।’’ তার পর নাম না করে ‘চোর’ বলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাকে কটাক্ষ করেন তিনি।