—প্রতীকী চিত্র।
নাম ভাসছে অনেকের। কিন্তু তার মধ্যে কেউ কি তৃণমূলের প্রার্থী? না কি নতুন মুখ? তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে কোচবিহার তৃণমূলে। বিশেষ করে শনিবার বিজেপির লোকসভা আসনের প্রার্থী হিসেবে নিশীথ প্রামাণিকের নাম ঘোষণা হওয়ার পরে গুঞ্জন আরও বেড়ে যায়। দলীয় কর্মীরা মনে করছেন, দল এমন এক জনকে প্রার্থী করবেন যিনি নিশীথের সঙ্গে সমান তালে টক্কর দিতে পারবেন বা তাঁকে ছাপিয়েও যেতে পারবেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘প্রার্থী যেই হোক, কোনও বিষয় নয়।। আমাদের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও চিহ্ন জোড়াফুল। আমাদের প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। জয় এ বার আমাদের হচ্ছে।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। তাই যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হবেন।’’
কোচবিহার লোকসভা আসন ২০১৪ সালে প্রথম বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। সে সময় বাম প্রার্থীকে হারিয়ে দেয় তৃণমূল প্রার্থী রেণুকা সিংহ। কিন্তু দুই বছর কাটতে না কাটতেই অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হন রেণুকা সিংহ। ২০১৬ সালে ওই আসনে উপনির্বাচন হয়। তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মণকে চার লক্ষের বেশি ভোটে হারিয়ে দেয়। ২০১৯ সালে পার্থপ্রতিমকে টিকিট দেয়নি দল। সেই সময় বাম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পরেশ অধিকারীকে টিকিট দেয় রাজ্যের শাসক দল। ৫৪ হাজারের বেশি ভোটে পরেশকে পরাজিত করে জয়ী হয় বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পরেশকে মেখলিগঞ্জ থেকে প্রার্থী করে দল। ওই বিধানসভাতেই শীতলখুচি থেকে পার্থপ্রতিম রায়কে প্রার্থী করে দল। পার্থ হেরে গেলেও পরেশ জয়ী হন। কিন্তু গত দু’বছরে পরেশের বিরুদ্ধে উঠেছে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। তাঁর মেয়ের চাকরি গিয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে। পরেশকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। পরেশকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েেছ। তাই পরেশকে যে এ বার তৃণমূল টিকিট দেবে না তা এক রকম স্পষ্ট।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, পার্থপ্রতিমের পাশাপাশি কোচবিহার লোকসভা আসনে সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়াকে তৃণমূলের প্রার্থী করা হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। আলোচনায় রয়েছেন তৃণমূলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা বলে পরিচিত গিরীন্দ্রনাথ বর্মণের নাম। এই তিন জনকেই একাধিক প্রচারে ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে। পার্থপ্রতিমকে ব্রিগেডের 'জনগর্জন' সভার বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি বৈঠকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই তিন জনের মধ্যে থেকেই কাউকে বেছে নিয়েছে দল? না কি আসছে নতুন মুখ, তা জানতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।