—প্রতীকী চিত্র।
জাতিগত সমীকরণ মাথায় রেখেই কি প্রথম দফায় জলপাইগুড়ি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করল না বিজেপি, চর্চা চলছে জেলায়। গত রবিবার এবং সোমবার, প্রার্থী বাছাই নিয়ে দু’দিনের একাধিক ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকের খবরে সে চর্চা আরও জোরালো হয়েছে। সেই বৈঠকের এক প্রান্তে ছিলেন জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের একাধিক অরাজনৈতিক এবং সামাজিক জাতিভিত্তিক সংগঠনের, অন্য প্রান্তে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং কেন্দ্রের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর নিজস্ব অফিসের প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, বৈঠকের মধ্যস্থতা করেছেন সঙ্ঘের কয়েকটি শাখা সংগঠনের জলপাইগুড়ির কার্যকর্তারা। একটি বৈঠকে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির এক নেতাও।
সূত্রের খবর, প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোচবিহারের অনন্ত রায়ের মতো একাধিক সম্প্রদায়ভিত্তিক সংগঠনের নেতারা ক্ষুব্ধ। তাঁদের ক্ষোভ প্রশমিত করে সকলের পছন্দের কোনও মুখকে প্রার্থী করার পথ খুলে রাখতেই জলপাইগুড়ি আসনে কোনও নাম প্রথমে ঘোষণা করা হয়নি বলে সেই সূত্রের দাবি। তবে দল সূত্রের দাবি, কোচবিহার-আলিপুরদুয়ারে যখন বিজেপি কর্মীরা প্রচারে নেমে পড়েছেন, তখন জলপাইগুড়ি আসনে প্রার্থী ঘোষণা না হওয়া কর্মীদের একাংশ মানসিক ভাবে কিছুটা দমে রয়েছেন। শুরু হয়েছে ক্ষোভও।
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, কয়েকটি জাতিগোষ্ঠীর মতামতের ভিত্তিতে জলপাইগুড়িতে প্রার্থী বাছাই হবে। সে প্রক্রিয়া চলছে। জেলার যে জাতিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে দিল্লি সরাসরি যোগাযোগ করছে, তাদের কয়েকটি যাতে বিদায়ী সাংসদ জয়ন্ত রায়ের পক্ষেই মতামত দেন, তা নিশ্চিত করতে বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বড় অংশ উঠেপড়ে লেগেছে। বিজেপির একটি অংশের দাবি, শেষ মুহূর্তে বড়সড় কোনও অঘটন না ঘটলে, জয়ন্তই প্রার্থী হতে পারেন। অবশ্য ভোট প্রভাবিত করতে পারে এমন এক বা একাধিক জাতিগোষ্ঠীর ক্ষোভ প্রশমিত বা দাবি পূরণ না হলে, তাঁদের বেছে দেওয়া বা সমর্থন করা কাউকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। সঙ্ঘের এক কার্যকর্তার কথায়, “সে রাস্তা খোলা রাখতেই হাতে সময় রাখা হয়েছে।”এ দিকে, বিদায়ী সাংসদ নিজের এলাকায় জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে চলেছেন। সোমবারও ধূপগুড়িতে ছিলেন তিনি। সাংসদ জয়ন্ত রায় দাবি করেছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে নিজের এলাকায় কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “বিজেপি সর্বভারতীয় দল, নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করে। সেই প্রক্রিয়া শেষ করেই প্রার্থী ঘোষণা হবে, যা হবে ভালই হবে।” তবে এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের একাংশের মধ্যে হতাশা লুকোতে পারছে না বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতি চলছে জেলায়। কিন্তু কর্মীদের অনেকের থেকেই তেমন সাড়া মিলছে না বলে দল সূত্রের দাবি। প্রথম দফার প্রার্থী ঘোষণার আগে দেওয়াল লিখন থেকে ফ্লেক্স টাঙানো শুরু করেছিলেন কর্মীরা। প্রথম তালিকায় জলপাইগুড়ির নাম না থাকায়, তাতেও ভাটা পড়েছে।