(বাঁ দিক) অখিলেশ সিংহ যাদব এবং তেজস্বী যাদব (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
দেশে মণ্ডল রাজনীতির শুরু হয়েছিল বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে। নব্বইয়ের গোড়া থেকে মণ্ডল-কমণ্ডলের লড়াই শুরু হয়েছিল এই দুই রাজ্যে। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে দেখা গেল বিজেপি-র মণ্ডল তথা উচ্চবর্ণের রাজনীতির সঙ্গে লড়াই করে উত্তরপ্রদেশে সাফল্য পেলেন এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। কিন্তু বিহারে কার্যত ব্যর্থ আরজেডি-র তেজস্বী যাদব।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে অখিলেশ যে ভাবে তাঁর প্রার্থীদের টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কুশলী পদক্ষেপ করতে পেরেছিলেন, তা পারেননি তেজস্বী। তার খেসারত দিতে হয়েছে তাঁকে। বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে ৩০টি পেয়েছে এনডিএ। অথচ উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনে তাঁদের জুটেছে মাত্র ৩৬টি।
উত্তরপ্রদেশে গোড়া থেকেই যাদব ব্যতীত ওবিসিভুক্ত গোষ্ঠীগুলি থেকে প্রার্থী করার কথা ভেবেছিলেন অখিলেশ। কিন্তু তেজস্বী প্রার্থী দেওয়ার সময় সেই যাদবদেরই গুরুত্ব দিয়েছেন। তেজস্বীর সমস্যা আরও গভীর হয়েছে, কারণ প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নীতীশ কুমারের জেডিইউ, যাদব নন এমন প্রার্থীর সংখ্যা বাড়িয়েছে। তাদের জোটসঙ্গী বিজেপি উচ্চবর্ণের প্রার্থী দিয়ে পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে জাতপাতের রাজনীতিতে বিহারে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তেজস্বী, উচ্চবর্ণের ভোটও জোটেনি তাঁর। আর ভোট শেষে এসপি-র দাবি, আরও অনেকগুলি আসনে তারা জিততে পারত, সামান্য ব্যবধানে হেরে গিয়েছে। এমনকি বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে তারা যদি কুর্মি জাতের সুরেন্দ্র পটেলকে দাঁড় করাত, মোদীর হেরে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকত। কিন্তু জোটের খাতিরে ওই আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেয় এসপি।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, উত্তরপ্রদেশে ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ৪৩.৫ শতাংশ ভোট, বিহারে ৩৯.৩ শতাংশ। অর্থাৎ ভোট শতাংশের হিসাবে তফাৎ মাত্র ৪ শতাংশের মতো। কিন্তু আসনের ক্ষেত্রে অনেকটাই তফাৎ হয়ে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে যাদব এবং মুসলমানরা ঢেলে ভোট দিয়েছেন এসপি-কে। কিন্তু তেমন ঘটেনি বিহারে। উত্তরপ্রদেশে ৮ জন উচ্চবর্ণের প্রার্থী জিতেছেন ‘ইন্ডিয়া’র হয়ে, বিহারে এক
জনও নয়।