বাঁ দিক থেকে, উদ্ধব ঠাকরে, রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মহারাষ্ট্রের ৪৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৯টিতেই ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র তিন শরিক। মঙ্গলবার এই দাবি করলেন এনসিপির প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ার। তিনি জানান, মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে কংগ্রেস, এনসিপি (শরদ) এবং উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি) এক সঙ্গে লড়বে।
শরদ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘৩৯টি লোকসভা আসনে রফা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। বাকি পাঁচ-ছ’টির জন্য আলোচনা এগোচ্ছে।’’ ছত্রপতি শিবাজির বংশধর ছত্রপতি শাহু মহারাজের সঙ্গে দেখা করার পর কোলাপুরে শরদ জানান, আসন্ন লোকসভা ভোটে প্রার্থী হবেন মরাঠা বীরের পারিবারিক উত্তরসূরি। মহারাষ্ট্রে তিন দলের বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’তে বিআর অম্বেডকরের পৌত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রকাশ অম্বেডকরের দল ‘বঞ্চিত বহুজন অঘাড়ী’ যোগ দিতে পারে বলেও সূত্রের খবর।
মরাঠওয়াড়া, পশ্চিম মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অংশে দলিত জনগোষ্ঠীর উপর প্রভাব রয়েছে প্রকাশের। একদা কংগ্রেসের সহযোগী ছিলেন তিনি। অকোলা থেকে ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে দু’বার লোকসভা ভোটেও জিতেছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর সঙ্গে জোট গড়েছিলেন তিনি। নিজে শোলাপুর লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে হেরে গেলেও পেয়েছিলেন এক লক্ষ ৭০ হাজার ভোট। প্রকাশের কারণেই ওই কেন্দ্রে বিজেপির কাছে হেরে যান কংগ্রেস প্রার্থী তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে।
সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবের নেতৃত্বধীন শিবসেনা (ইউবিটি) সে রাজ্যের ৪৮টি আসনের মধ্যে ২৩টিতে লড়ার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে সরাসরি সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির সহযোগী হিসাবে শিবসেনা ২৩টি আসনে লড়েছিল। জিতেছিল ১৮টিতে। কিন্তু ২০২২ সালের জুনে একনাথ শিন্ডের গোষ্ঠীর বিদ্রোহের পরে ১২ জন সাংসদই হাতছাড়া হয়েছে বালাসাহের ঠাকরের পুত্রের। শিন্ডের কাছে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রিত্ব এমনকি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে প্রয়াত পিতার তৈরি দলের নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘তির-ধনুক’ও খুইয়েছেন উদ্ধব! পরিস্থিতি বুঝে উদ্ধব কিছুটা নমনীয় হয়ে ১৯টিতে লড়ার দাবি জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
মহারাষ্ট্রে লোকসভা আসনের সংখ্যা ৪৮। ২০১৯ সালের ভোটে কংগ্রেসের সহযোগী হিসাবে ১৯টিতে লড়ে ৪টি জিতেছিল এনসিপি। ২৫টি লড়ে কংগ্রেসের ঝুলিতে আসে মাত্র ১টি! এনসিপি এবং কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী নবনীত রানা অমরাবতী কেন্দ্রে জিতেছিলেন। তবে তিনি এখন বিজেপি শিবিরে। অন্য দিকে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির সহযোগী হিসাবে ২৩টি আসনে লড়ে ১৮টিতে জয় পেয়েছিল শিবসেনা। যদিও ইতিমধ্যেই তার মধ্যে ১২ জন সাংসদ যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবিরে। অন্য দিকে, রায়গঢ়ের সাংসদ সুনীল তটকরে যোগ দিয়েছেন অজিত শিবিরে।