তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়।
ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা। সঙ্গে দলের অন্দরের দ্বন্দ্ব। সব নিয়েই জেলায় তৃণমূলের ‘মাথাব্যথার’ ব্লক খয়রাশোল। দুবরাজপুরের পর এ বার সেই খয়রাশোল ব্লকেই সংগঠন মজবুত করার দিকে নজর দিতে চান বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। দোল পেরোলেই ওই ব্লকের জন্য তিনি টানা দিন দিন সময় দেবেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
দোলের সময় প্রচার বা সংগঠনের কাজে সামান্য ছেদ টেনে কলকাতায় ফিরেছেন শতাব্দী। সেখান থেকে ফোনে জানালেন, ‘‘দোলের দিনটা কলকাতায় থাকব। মঙ্গলবারই জেলায় ফিরছি। বুধ থেকে শুক্র খয়রাশোলের জন্য বরাদ্দ।’’
খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার শতাব্দী থাকবেন খয়রাশোলের পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বৃহস্পতিবার থাকবেন তারিখ কেন্দ্রগড়িয়া ও খয়রাশোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। শেষ দিন বরাদ্দ লোকপুর ও হজরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জন্য। কিন্তু ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাকি ৫টি পঞ্চায়েত এলাকার জন্য কখন সময় দেবেন তা জানা যায়নি।
গত কয়েক বছর ধরেই খয়রাশোল কাঁটা ভুগিয়েছে তৃণমূলকে। গত লোকসভা নির্বাচনে এই ব্লকে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছিল তৃণমূল। গোটা ব্লকে ১৫ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল তারা। ব্যবধান কমলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে দুবরাজপুর বিধানসভা আসনে বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে খয়রাশোল ব্লকের জন্যই। পঞ্চায়েত নির্বাচন অবশ্য শাসক দল দাপট বজায় রেখে জিতেছে। কিন্তু তার আগে থেকে ব্লকে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার নেয়। তৃণমূল সূত্রে দাবি, মূল সংঘাত ছিল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী ও তার বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে।
গত জানুয়ারিতে কাঞ্চনকে রেখেই তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর আরও চার সদস্য-সহ মোট পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়ে ব্লক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তার পরেও সমস্যা রয়ে গিয়েছে। শুক্রবার চর্চায় থাকা খয়রাশোলের ব্লকে নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয় তৃণমূলের তরফে। সেখানে ব্লক সংগঠন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পাঁচ জন তো আছেনই, জায়গা দেওয়া হয়েছে ব্লকের সব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেই। কিন্তু সেই বৈঠকও প্রাক্তন ব্লক সভাপতি এড়িয়ে গিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। এমন কোন্দলের রেশ যাতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে না পড়ে সে জন্যই বিশেষ নজর দিতে চাইছেন প্রার্থী। দলও সেটাই চাইছে বলে খবর।
কার্যত এই ‘মডেলে’ই গত সপ্তাহে নজর দেওয়া হয়েছিল দুবরাজপুর ব্লকে। কারণ তৃণমূল সূত্রে দাবি, সাংগঠনিক ভাবে দুবরাজপুর ব্লকও ভাল জায়গায় নেই। এখানেও ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকাকে ভাগ করে তিন দিন বৈঠক করেন শতাব্দী। তারপর থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে। শনিবার শতাব্দীর সমর্থনে মিছিলও হয়েছে সেখানে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার রাতে পুর এলাকার নেতা ও পুরপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে দুবরাজপুরে। নেতৃত্বে ছিলেন দলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। লক্ষ্য একটাই, কী করে শহরের লিড বাড়ানো যায়। এ বার খয়রাশোলেও নজর দেওয়া হচ্ছে সেই লক্ষ্যেই। শতাব্দী বললেন, ‘‘প্রচারের জন্য এখনও সময় আছে। আগে কর্মীদের সঙ্গে বসে আলোচনা সেরে নিই।’’