পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অগ্নিমিত্রা পাল। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গিয়ে থানায় ঢুকে ডিউটি অফিসারকে আঙুল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় এ বার অগ্নিমিত্রার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট পাঠাতে চলেছে পুলিশ। বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপও করা হবে বলে জানালেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের তরফে জেলাশাসক রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। আমরা রিপোর্ট পাঠাব। একই সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেব।’’
বুধবার মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা। সেখানে তাঁকে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। অগ্নিমিত্রার বক্তব্য, রামনবমী নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। সেই কারণেই মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চান বিজেপি প্রার্থী। কিন্তু অভিযোগ, ডিউটি অফিসার অগ্নিমিত্রার অভিযোগ গ্রহণ করতে চাননি। সেই সময় আঙুল উঁচিয়ে চিৎকার করে কথা বলতে দেখা গিয়েছে অগ্নিমিত্রাকে। দাবি, ডিউটি অফিসারকে হুমকিও দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।
পুলিশের অভিযোগ না নেওয়ার প্রতিবাদে থানার গেট বন্ধ করে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান অগ্নিমিত্রা-সহ বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। থানার মূল দরজা কাপড় দিয়ে বেঁধে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে থানার মূল দরজায় তালাও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) পিনাকী দত্ত-সহ দুই ডেপুটি পুলিশ সুপার। আইসি জানতে চান, কেন ডিউটি অফিসারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। অগ্নিমিত্রার পাল্টা প্রশ্ন, কেন তাঁর অভিযোগপত্র নেওয়া হল না, কেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হল না।
বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘‘একটা এফআইআর করতে গেলেও আন্দোলন করতে হয় পশ্চিমবঙ্গে। একজন বিধায়কের সঙ্গে যদি এটা হয়, তা হলে রাজ্যের গরিব মানুষদের সঙ্গে কী হয় বোঝা যাচ্ছে। এক জন ডিউটি অফিসার বলছেন, আইসি না এলে এফআইআর নেওয়া যাবে না। তা হলে ওঁকে বসিয়ে রাখা হয়েছে কেন মাইনে দিয়ে?’’ বিজেপি প্রার্থী হুঁশিয়ারি দেন, এ নিয়ে তাঁরা যত দূর যেতে হয় যাবেন।
এই ঘটনায় বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল। জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপি যত এই রকম আন্দোলন করবে, ততই মানুষের মন থেকে ধুয়েমুছে যাবে।’’