প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের এই সন্ন্যাসী এখন রাজ্য রাজনীতিতে আলোচিত নাম। নির্বাচনী প্রচার থেকে তাঁকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নাম নিয়ে সমালোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনার পাল্টা হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রী মহারাজের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের। সোমবারও মোদী নাম না করে নিশানা করলেন মমতাকে। তাঁর কথা, ‘‘রামকষ্ণ মিশন, সাধু-সন্তদের অপমান বাংলার মানুষ কিছুতেই মাফ করবেন না। আর সবাই জানেন, আমার জীবনে রামকষ্ণ মিশনের ভূমিকা কতটা।’’
‘‘মোদী আপনাদের স্বপ্নপূরণে দিনরাত কাজ করবে। আপনারা আমার একটা কাজ করবেন? আপনারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বলুন, আপনাদের মোদীজি এসেছিলেন। আপনাদের প্রণাম জানিয়েছেন।’’
‘‘আইন ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে কোনও কাজ হয় না। তাই বাংলার উন্নয়ন হয়নি আমার চেষ্টার পরেও। মেদিনীপুর, তমলুকে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল এত বছর কিছুই করেনি। আসলে সারা বাংলার জন্য দুর্ভাগ্যের এটা।’’
‘‘কংগ্রেস এবং তৃণমূল সব সময় আদিবাসীদের প্রগতি অবরুদ্ধ করেছে। আদিবাসী মহিলাকে প্রথম বার রাষ্ট্রপতি করেছে বিজেপি। কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেরা অনেক চেষ্টা করেছিল বাধা দেওয়ার। কিন্তু মোদী আছে। তৃণমূল প্রার্থী নামিয়েছিল। তৃণমূল আদিবাসীকে রাষ্ট্রপতি করতে দিতে চায় না। তারা আপনাদের উন্নয়ন করবে?’’
‘‘রামকৃষ্ণ মিশন এবং সন্তদের অপমান বাংলা কখনও সহ্য করবে না। দেশবাসী জানেন, আমার জীবন গড়ার ক্ষেত্রে রামকষ্ণ মিশনের কতখানি অবদান রয়েছে।’’
রামমন্দিরের প্রতিষ্ঠা কি অপবিত্র? প্রশ্ন করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। অভিযোগ করলেন, রামনবমীর অনুষ্ঠানে হামলা করিয়েছে তৃণমূল।
মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস এক দিকে পরিবারবাদকে তোয়াজ করে। অন্য দিকে, তোষণের রাজনীতি করে। মিডিয়া এদের অনেক বাঁচিয়েছে।’’
কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে মোদী বলেন, ‘‘আজই সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেসের একটি ভিডিয়ো দেখলাম। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এরা ভীষণ সাম্প্রদায়িক। ১২-১৩ বছরের পুরোনো ভিডিয়ো। কংগ্রেসের শাহজাদা বলছেন, কংগ্রেস মুসলমানদের সংরক্ষণ দেবে। তখন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বলছেন অন্য কথা। আর তাল ঠুকে কংগ্রেস বলছে,তারা মুসলমানদের সংরক্ষণ দেবে।’’
‘‘বাংলায় তৃণমূলের রিপোর্ড কার্ড নেই। রেট কার্ড আছে।’’ দুর্নীতি ইস্যুতে খোঁচা দিয়ে মন্তব্য মোদীর।
‘‘পুরো দেশ বাংলার অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। এখানে হিংসা হয়। বিজেপি কর্মীদের খুন হতে হয়।ঝাড়গ্রামেরও একই অবস্থা। খুন এখানে সাধারণ ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের চিন্তা কেবল ভোটব্যাঙ্কের। অনুপ্রবেশকারীদের বলে বলে বাংলায় ঢোকাচ্ছে এরা।’’ বললেন মোদী।
এখনও পর্যন্ত পাঁচ দফা ভোট হল।পাঁচ দফাতেই পরাস্ত হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ। বললেন মোদী।
হলদিয়ায় এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর তৃতীয় সফর ছিল। এর আগে দু’টি সরকারী প্রকল্পের উদ্বোধনে হলদিয়ায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রানিচকে ওভারব্রিজ এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের গ্যাস রিফিলিং স্টেশনের উদ্বোধনে। বিগত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও এক বার হলদিয়ায় যান। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে মোদী কাঁথিতে এক বার জনসভা করেছিলেন।
দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূল এবং কংগ্রেসকে একযোগে আক্রমণ মোদীর।
কংগ্রেস তো ডুবেই গিয়েছে। তৃণমূলের জাহাজেও ফুটো হয়ে গিয়েছে। দু’জনেই ডুবছে।
‘জয় মা কালী’ বলে বক্তৃতা শুরু মোদীর। বললেন, ‘ঝাড়গ্রামবাসীকে আমার জোহার’। জানালেন আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার যেতে পারেনি হলদিয়ায়। একসঙ্গে তাই দুই সভা করছেন। বললেন, ‘‘তমলুকবাসীর কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’
সুকান্তের পর মঞ্চে বক্তব্য শুরু মোদীর।
ঝাড়গ্রামের সভা ভার্চুয়াল মাধ্যমে হলদিয়ায় এলইডি স্ক্রিনে চালিয়ে দেখানো হচ্ছে । আবহাওয়ার কারণে দুু’টি সভা একত্রে প্রধানমন্ত্রীর।
‘‘গরম বাড়লে নাকি মাথা খারাপ হয়ে যায়। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ আছেন কি না, জানি না। চাই তিনি ভাল থাকুন।কিন্তু এখন থেকে তিনি অজুহাত দিতে শুরু করেছেন।’’
সভায় এসেও সঙ্গে সঙ্গে ভাষণ শুরু করলেন না প্রধানমন্ত্রী। কানে কানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে কিছু বলেন মোদী। তার পর আবার মঞ্চে বক্তব্য শুরু করেন সুকান্ত।