দেশের মোট ৯৬টি আসনে ভোট হতে চলেছে সোমবার। ছবি: পিটিআই।
চতুর্থ দফায় পশ্চিমবঙ্গের আট লোকসভা কেন্দ্র-সহ দেশের মোট ৯৬টি আসনে ভোট হতে চলেছে সোমবার। ভোট হচ্ছে দেশের ৯টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। অন্ধ্রপ্রদেশ (২৫) এবং তেলঙ্গানা (১৭)-র সব আসনেই ভোট হয়ে যাচ্ছে সোমবার। তা ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের ১৩টি, মহারাষ্ট্রের ১১টি, মধ্যপ্রদেশের ৮টি, ওড়িশার ৪টি, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের ৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর আসনেও একই দিনে ভোটগ্রহণ হবে।
সোমবার চতুর্থ দফার ভোটে একঝাঁক তারকা প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটারেরা। তারকা প্রার্থীদের মধ্যে নজর থাকবে উত্তরপ্রদেশের কনৌজ কেন্দ্রের এসপি প্রার্থী তথা দলের প্রধান অখিলেশ সিংহ যাদব, বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী গিরিরাজ সিংহ, হায়দরাবাদের মিম প্রার্থী আসাদউদ্দিন ওয়েইসি উপরে। এ ছাড়াও নজর থাকবে অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী তথা সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির বোন ওয়াইএস শর্মিলা, ঝাড়খণ্ডের খুঁটি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার উপরে।
হায়দরাবাদে ওয়েইসির নিরঙ্কুশ আধিপত্য খর্ব করতে বিজেপি এ বার প্রার্থী করেছে মাধবীলতাকে। পদ্মশিবিরের অঙ্ক অনুযায়ী, ভোটের মেরুকরণে নিজামের শহরে এ বার পদ্ম না ফুটলেও ওয়েইসিকে যথেষ্ট বেগ দেবেন মাধবীলতা। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কনৌজ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সুব্রত পাঠকের কাছে প্রায় ১৩ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলেন অখিলেশ-পত্নী ডিম্পল যাদব। এ বার কার্যত সকলকে চমকে দিয়েই এই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন অখিলেশ নিজে। বিজেপি পুনরায় প্রার্থী করেছে শর্মিলাকেই।
অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপা কেন্দ্রে লড়াইটা আরও আকর্ষণীয়। এক সময় এই কেন্দ্র থেকে জিতেই টানা চার বার সাংসদ হয়েছিলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডি। ১৯৯৯ সালে তিনি অবিভক্ত অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই কেন্দ্র থেকে জেতেন রাজশেখরের ভাই বিবেকানন্দ রেড্ডি। তার পর এই কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হন জগন্মোহনও। বর্তমানে এই কেন্দ্রের যিনি সাংসদ, সেই অবিনাশ রেড্ডি জগনের কাকা ভাস্কর রেড্ডির পুত্র। কিন্তু বিবেকানন্দকে রহস্যমৃত্যুতে তাঁর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন কেউ কেউ। তাঁকে নাকি প্রার্থী করতেও এক সময় আপত্তি ছিল শর্মিলার। পারিবারিক সেই বিবাদ এ বার রাজনৈতিক মঞ্চে চলে এসেছে। দাদার দলের বিরুদ্ধেই কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন শর্মিলা। রাজশেখরের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার কার হাতে থাকবে, সে দিকে নজর থাকবে সকলের।
অন্ধ্রের ১৭৫টি বিধানসভা কেন্দ্রেও ভোট হবে শুক্রবার। জগনের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই দিতে এ বার সে রাজ্যে হাত মিলিয়েছে বিজেপি, চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল টিডিপি এবং অভিনেতা-রাজনীতিক পবন কল্যাণের দল জনসেনা পার্টি। প্রথম পর্বে ওড়িশার ২৮টি বিধানসভা কেন্দ্রেও ভোট হবে শুক্রবার।
বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রে গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিআই প্রার্থী করেছিল তৎকালীন ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার। কিন্তু বিজেপির গিরিরাজ সিংহের কাছে বিপুল ভোটে পরাস্ত হন তিনি। কানহাইয়া অবশ্য পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। তবে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক হিসাবে এ বারও বেগুসরাই কেন্দ্রে সিপিআই লড়াই করছে। তারা প্রার্থী করেছে অবধেশ কুমার রাইকে। অবধেশকে সমর্থন করছে কংগ্রেস এবং লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি। বিজেপি এ বারেও এই আসনে প্রার্থী করেছে গিরিরাজকে।
গত তিন দফার নির্বাচনেই ভোটদানের হার গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। তৃতীয় দফায় ভোটের হার কেমন হয়, সে দিকে নজর থাকবে।