—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুন সন্ত্রাসের সাক্ষী থেকেছে মুর্শিদাবাদ। গোটা পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বে মুর্শিদাবাদ জেলায় ভোট হিংসায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ জনের। জখম হয়েছিলেন দেড়শো জনেরও বেশি। ফের আরও একটি নির্বাচন দুয়ারে এসে হাজির হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সব এলাকায় শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছিল, খুন সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল সে সব এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে বেশি বেশি রুট মার্চ করানোর দাবি উঠেছে। বিরোধীরা দাবি করেছেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। অনেক জায়গায় বুথ দখল করে তৃণমূল ভোট করতে দেয়নি। তাঁরা চান, ওই সব এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে রুট মার্চ করানো হোক।
জেলা প্রশাসন জানা গিয়েছে, আগেই ৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এই জেলায় এসেছে। বৃহস্পতিবার আরও দু’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। এই আট কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মুর্শিদাবাদের দুই পুলিশ জেলায় ৪ কোম্পানি করে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘বিগত নির্বাচনে যেখানে যেখানে সমস্যা হয়েছিল, যে সব এলাকায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা থাকতে পারে এ রকম নানা দিক দেখে এলাকা চিহ্নিত করে রুট মার্চ করা হচ্ছে।’’
বাসিন্দারা কী বলছেন? গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাড়ি থেকে বুথে ভোট দিতে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হন এক কংগ্রেস কর্মী। নিয়াকত শেখ (৬০) নামে নওদার গঙ্গাধারীর ওই কর্মীকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেদিনই চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর গ্রামে পা পড়েনি। একই ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন হরিহরপাড়ার নিয়ামতপুরে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে তৃণমূলের লোকজনের হাতে মার খেয়ে জখম হয়েছিলেন রেন্টু শেখ নামে এক সিপিএম কর্মী। দিন দশেক পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। সেই নিয়ামতপুরে গ্রামেও এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর পা পড়েনি।
বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার যে সব এলাকায় খুন সন্ত্রাস হয়েছে, বুথ দখল হয়েছে, সে সব এলাকাকে চিহ্নিত করে এখন থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে রুট মার্চ করানো হোক।’’ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘গোটা জেলা জুড়েই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে রুট মার্চ করে মানুষের মনোবলকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে যে এলাকায় বিগত নির্বাচনগুলিতে খুন সন্ত্রাস হয়েছিল, সে সব এলাকায় বাড়তি নজর দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী যদিও বলেন, ‘‘বিরোধীদের বুথে বুথে কর্মী নেই। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি বা সন্ত্রাসের কথা উঠছে। যাই হোক, এ জেলার সব ক’টি আসনে আমরা জয়লাভ করব।’’