—প্রতীকী চিত্র।
কেন্দ্রীয় বাহিনী ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া জেলার সব ক’টি থানায় টহল দিয়েছে বলে দাবি করছে জেলা পুলিশ। অথচ বিরোধীদের প্রশ্ন থামছে না। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা চাইল জেলা পুলিশ।
সোমবার বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কনফারেন্স হলে সর্বদল বৈঠক হয়। সেখানে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ও এলাকায় টহলদারি নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধী দলগুলি।
নির্বাচন ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগেই বাঁকুড়া জেলায় মোট চার কোম্পানি আধাসেনা পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আধাসেনা জেলায় আসার পর থেকেই তাদের এলাকা টহলদারিতে নামায় পুলিশ। পুলিশ আধিকারিকেরাও আধাসেনার সঙ্গে এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন।
জেলা পুলিশের দাবি, চারটি কোম্পানি দৈনিক চারটি করে থানায় টহল দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার ২৪টি থানায় তাদের একদফা করে টহল দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু থানায় দু’দফা টহল হয়। নিয়মিত টহলদারি চালানো হচ্ছে রুটিন মাফিক।
অথচ সোমবার সর্বদল বৈঠকে বিজেপি, সিপিএম নেতৃত্ব একযোগে অভিযোগ তোলেন, সন্ত্রস্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টহলে পাঠানো হোক। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখার অভিযোগ, ‘‘আমার এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টহল দিতে দেখিনি। স্থানীয়েরাও দেখেননি। তারপরেও পুলিশ কী করে সব থানায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে টহল দেওয়ার কথা দাবি করছে?’’
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির দাবি, ‘‘চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় জওয়ান জেলায় রয়েছে। রুটিন মাফিক তারা বিভিন্ন জায়গায় টহল দিচ্ছে। জেলার সব কটি থানাতেই টহল দেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও থানায় একাধিকবার টহল হয়েছে। এরপরেও কোনও বিশেষ এলাকা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের চিন্তা থাকলে, তার সুনির্দিষ্ট তালিকা দিতে বলা হয়েছে।’’
পুলিশের তালিকা চাওয়াকে কেন্দ্র করেও কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিষ্ণুপুর মহকুমার কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস, পাত্রসায়রের মতো ব্লকগুলি বরাবরই রাজনৈতিক সন্ত্রাস কবলিত বলে চিহ্নিত। বাম আমল থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই সব এলাকায় রাজ্যের শাসকদলের বেশির ভাগ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতাটা কার্যত দস্তুর হয়ে উঠেছে । তৃণমূল আমলেও ২০১৮ ও ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে একই চিত্র দেখা গিয়েছে।
সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের কাছে পাত্রসায়র, ইন্দাস, কোতুলপুর, জয়পুরের মতো ব্লকগুলির স্পর্শকাতর বুথের তথ্য চাইছে। ওই ব্লকগুলির একটিও কি এমন বুথ রয়েছে যেটা সন্ত্রাসকবলিত নয়? পুলিশের অবিলম্বে উচিত ওই সব ব্লকের প্রতিটি বুথকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করে সেখানে রুটিন মাফিক কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এলাকায় টহলদারিতে পাঠানো।’’
পুলিশের দাবি, ভোট ঘোষণা সদ্য হলেও রাজনৈতিক দলগুলি অনেক আগে থেকেই জেলায় প্রার্থী ঘোষণা করে রাজনৈতিক প্রচার শুরু করেছে। তবে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারে বা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যার অভিযোগ এখনও ওঠেনি। তবে যে কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে অভিযোগ এলে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।