দুর্গাপুরের বাজারে কীর্তি আজাদ। ছবি: বিকাশ মশান।
প্রার্থীকে নিয়ে সাইকেল মিছিল করার কথা ছিল দলের নেতা-কর্মীদের। কিন্তু প্রার্থী সাইকেল নিয়ে বাজারে ঢুকে পড়বেন, ভাবেননি তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের চণ্ডীদাস বাজারে ঢুকে ফল, আনাজের সঙ্গে কিনলেন ইলিশ মাছও। বিরোধীদের কটাক্ষ, বাঙালি আবেগ ছুঁতে এমন লোকদেখানো কাজ করছেন কীর্তি।
বুধবার কীর্তি সপরিবারে দুর্গাপুরে এসেছেন। তিনি জানান, ভোটের মরসুমে পরিবার তাঁর সঙ্গেই থাকবে। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে বিরোধীরা এখনও প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। সেখানে কীর্তি প্রচারে নেমে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ ডিএসপি টাউনশিপে
সাইকেল মিছিল বেরোয়। কীর্তির সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রমুখ। বাজারে গিয়ে
কীর্তি ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরে নানা ফল ও আনাজের পরে মাছের বাজারে গিয়ে ইলিশ কেনেন।
কীর্তির দাবি, ‘‘এ বার দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই। এখানে প্রতিটি মানুষের কাছে তাঁর সামাজিক প্রকল্পের সুফল পৌঁছেছে। রাজ্যে বিজেপি এ বার শূন্যে নামবে। আমরা ছক্কা হাঁকিয়ে মাঠের বাইরে বার করে দেব ওদের।’’ বিরোধীদের এখনও প্রার্থী দিতে না পারার বিষয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘যখন সামনে মমতাদিদির মতো ‘ক্যাপ্টেন’ থাকেন, তখন অনেক বড় ব্যক্তির হাল খারাপ হয়ে যায়!’’
সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের পাল্টা দাবি, ‘‘অবাঙালিরা এখানে এসে কেউ রসগোল্লা, কেউ মাছ খান। উনিও (কীর্তি) তেমন একজন। বাজারে গেলেন, মাছ কিনলেন, কিন্তু ইস্পাত শিল্পের শ্রমিকদের বকেয়া নিয়ে কিছু বললেন না! উনি বাংলার শ্রমিকদের কথা কী বুঝবেন?’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘এ সব নাটক করে লাভ হবে না। এলাকার মানুষ ভূমিপূত্র চাইছেন।’’
বিজেপির অন্যতম রাজ্য
সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, তৃণমূল প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে বিহার, গুজরাত থেকে প্রার্থী নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘কীর্তি আজাদ ২০ বছর বিজেপি করেছেন। তার পরে
কংগ্রেসে গিয়েছেন। এখন তৃণমূলে আছেন। যতই ইলিশ মাছ কিনুন, লাভ হবে না।’’ কীর্তি অবশ্য জানান, তিনি বরাবর ছোট মাছ পছন্দ করেন। তবে কাঁটার জন্য ইলিশ খেতে একটু সমস্যা হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিরোধীরা কী বলছেন, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।’’