প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
ভোট ১৯ এপ্রিল। তার আগে নিয়মিত চার-পাঁচটি বুথ এক হয়ে বাড়ি থেকে রান্না করে এনে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতে করতে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির করলে, অনেক বেশি কাজ হবে।
আজ ‘নমো’ অ্যাপের মাধ্যমে তামিলনাড়ুর বুথ কর্মীদের এই পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে তামিল ভাষার প্রতি তাঁর গভীর প্রেম, তামিলনাড়ুর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় যোজনার খতিয়ান যাতে প্রতিটি বুথের কর্তার পকেটে থাকে, সেই নির্দেশও দিয়েছেন মোদী। ভোটের আগে শেষ মুহূর্তের এই নির্দেশনামা, বুথ জয়ের জন্য। বুথ কর্মীদের উজ্জীবিত করতে চেয়ে মোদীর বক্তব্য, “চৌকি জয় করতে না পারলে কেল্লা জয় করা যায় না। এ ক্ষেত্রে চৌকি হল বুথ। আপনারা প্রতিটি বুথ জয় করার চেষ্টা করুন। কোনও বুথে যেন বিজেপির বা তার জোটসঙ্গী দলগুলির পতাকা ঝুঁকে না পড়ে।”
পরিবারবাদ এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গে তুলে ডিএমকে সরকারকে নিশানা করতে বলেছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “যে কোনও রাজ্যেই সরকারের উপরে কিছু ক্ষোভ, অসন্তোষ থাকে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এ বার তামিুলনাড়ুতে যখনই এসেছি, দেখেছি এখানকার রাজ্য সরকারের উপর জনতার ভয়ঙ্কর ঘৃণা এবং ক্রোধ। এই পরিবারবাদী দলের বিরুদ্ধে এই যে রাগ, এমন আগে দেখিনি এখানে।” তাঁর কথায়, “আপনারা জেনে রাখুন, পরিবারবাদী পার্টির একটাই মন্ত্র। তা হল পরিবারের জন্য, পরিবারের হয়ে, পরিবারের থেকে।”
কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত যোজনায় ডিএমকে তার সিলমোহর লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ তুলে তিনি বার বার বুথ কর্তাদের সতর্ক করেছেন, এই কাজগুলি যে মোদী সরকারই করেছে তা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে। মোদীর কথায়, “আমি দেখেছি ডিএমকে-র মতো দলগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের ভাল কাজ নিয়ে খুবই ভয়ে থাকে। কারণ মোদীর কাজের খবর জনতার কাছে পৌঁছে গেলে, তাঁরা রাজ্যে সরকারের কাছে হিসাব চাইবেন। তাই অনেক সময়ই যোজনার সুফল তারা নীচে পর্যন্ত পৌঁছতে দেয় না। আবার অনেক যোজনায় নিজেদের সিলমোহর লাগিয়ে দেয়। এটা বার বার আপনাদের বুথের মানুষের কাছে বোঝানো জরুরি যে, এই সব কাজ কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাতে মানুষের আস্থা বাড়বে।”
গত কয়েক মাসে বার বার তামিলনাড়ু এসেছেন মোদী। সরকারি যোজনা শিলান্যাসে ভাসিয়ে দিয়েছেন। তামিলে নমো অ্যাপ খুলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তামিল ভাষায় নিজের কথা পৌঁছে দিয়েছেন এই রাজ্যে। দক্ষিণ ভারতে বিজেপি বিলীন হয়ে যাওয়ার পরে মোদীর এই বাড়তি উদ্যোগ, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ‘চারশো পারের’ যে স্লোগান তিনি দিয়েছেন, তার কাছাকাছি পৌঁছতে গেলে দক্ষিণ থেকে আসন বাড়ানো প্রয়োজন, সেটা বার বার শীর্ষ নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
মোদীর কথায়, “আমি আধ ঘণ্টার জনসভা করে বড় বড় কথা বলে কাজ সারতে পারতাম। কিন্তু আজ বুথ কর্তাদের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা সময় ব্যয় করলাম। তার কারণ, ভোট জেতার আসল জায়গা হল বুথ। প্রতিটি বুথে যেন মানুষ আমাদের কমল চিহ্নে এবং আমাদের সহযোগী দলগুলির প্রতীক চিহ্ন ভাল করে জানে।” যে ক’দিন সময় আছে প্রতিটি বুথে ‘যাত্রা’ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। প্রযুক্তির উপরে নজর দিয়ে প্রতি বুথে এক জন করে সমাজমাধ্যমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী তৈরি, কেন্দ্রীয় যোজনার লাভ পেয়েছেন এমন ব্যক্তিদের ‘রিল’ তৈরি করে সমাজমাধ্যমে প্রচার শুরু করতে বলেন তিনি। আর তামিল ভাষা সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘আমি বিদেশে যেখানেই যাই, তামিল ভাষার প্রাচীনত্ব ও ঐতিহ্যের প্রচারের জন্য কিছু না কিছু করি। এই ভাষার প্রতি আমার গভীর অনুরাগ। দুর্ভাগ্য, বলতে পারি না।’’