সমনামী: বৌমা ভোট দিলেন, কিন্তু পারলেন না শাশুড়ি। — নিজস্ব চিত্র।
নামের গেরোয় ফেঁসে ভোট দেওয়া হল না শাশুড়ির। উল্টে পীড়াপীড়ি করায় খেতে হল কেন্দ্রীয় বাহিনীর ধমক। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের টাকি পুর এলাকায়। জানা গিয়েছে, বৌমা এবং শাশুড়ির নাম এক। বৌমা সকালে ভোট দিয়েছেন। শাশুড়ি এসেছিলেন দুপুরে। কিন্তু নামের গেরোয় পড়ে ভোট না দিতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাশুড়ি।
ভোটদান কেন্দ্র টাকি পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড। বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভায় পড়ে এই এলাকা। সেখানে সকালেই ভোট দিয়ে গিয়েছেন বাড়ির বৌমা সালেয়া বিবি। বাড়ির কাজ সেরে দুপুরে ভোটকেন্দ্রে এসেছিলেন সালেয়ার শাশুড়ি সালেয়া বিবি শেখ। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতেই পথ আটকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। সঙ্গে সঙ্গে শাশুড়ি বার করে দেখান নিজের ভোটার কার্ড। বলেন, ‘‘দেরি হয়ে গেল একটু!’’ ভেবেছিলেন, প্রতি বার যেমন কার্ড দেখে ভিতরে ঢুকতে দেয় বাহিনী, এ বারও তেমনই হবে। আর তিনি গিয়ে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবেন। কিন্তু কোথায় কী! লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে এলেন জওয়ানরা। শাশুড়িকে ধমকের সুরে বলা হয়, এখনই ভোটকেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে যেতে। সকালে ভোট দেওয়ার পর দুপুরে আবার ভোট দিতে এসেছেন কেন? এই প্রশ্নও করা হয় তাঁকে। জওয়ানদের প্রশ্নের মুখে পড়ে ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান ৭৩ বছরের সালেহা। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তাঁর এবং তাঁর বৌমার নাম একই। সকালে বৌমা ভোট দেন, দুপুরে তিনি এসেছেন। কিন্তু সত্তরোর্ধ্বের অভিযোগ, কোনও কথাই শুনতে চাননি কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। উল্টে বিভিন্ন কথা বলে তাঁকে অপমান করা হয় বলেও কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছেন শাশুড়ি। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে বলছে, তুমি এক বার ভোট দিয়ে চলে গিয়েছে, আবার এসেছ! আমি বললাম, কোথায় আমি ভোট দিয়েছি? এই দেখুন হাতের আঙুল। কোথাও কালির দাগ নেই। এই শেষ বয়সে এসে ভোটটা দিতে পারলাম না, এটাই আফসোস। আমি সারা জীবন ভোট দিয়ে এসেছি। আমার কি কোনও সম্মান নেই?’’ কান্নায় ভেঙে পড়েন শাশুড়ি।
অন্য দিকে, বৌমা বলছেন, ‘‘আমার নাম সালেয়া। স্বামীর নাম আবুল শেখ। আমার আর শাশুড়ির নাম একই। কিন্তু তাঁর স্বামীর নাম আলাদা। আমি সকালে ভোট দিয়ে গিয়েছি। এখন শাশুড়িকে ভোট দিতে দেবে না। আমি এসে ওদের বললাম, কিন্তু বলল না হবে না। তার পর আমাদের তাড়িয়ে দিল।’’