মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
এক দিকে কংগ্রেস ও সিপিএমকে দুষে ডাক দিলেন ভোট বিভাজন রুখে দেওয়ার। অন্য দিকে, বলে গেলেন, রাজ্যের গরিব ও সাধারণ মানুষের জন্য, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় সংখ্যালঘু মানুষের জন্য তিনি কী করেছেন। মালদহের পরে মুর্শিদাবাদেও সেই একই সুর শোনা গেল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে।
সোমবার খড়গ্রামের সভা থেকে মমতা প্রশ্ন তোলেন, “মুর্শিদাবাদের মানুষ কি সিপিএমের অত্যাচার ভুলে গেলেন? ভোট ভাগ করবেন না।” মমতা আরও দাবি করেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দু’টি চোখ— বাম এবং কংগ্রেস।” ভগবানগোলায় তিনি বলেছেন, “সেলিম কোনও দিনই জিততে পারবেন না। কিন্তু কেন্দ্র ওঁদের কোনও দিনই এজেন্সি দিয়ে স্পর্শ করে না। আমাদের যত নেতানেত্রী, সব জেলে।”
বাম ও কংগ্রেসের জোট যে এ বারে সংখ্যালঘু ভোটে বড় ভাগ বসাতে পারে, তা কার্যত মেনে নিয়েছেন মমতা। বাম-কংগ্রেস সম্পর্কে তিনি বলেন, “ওরা ভোট কাটুয়া। যেখানে আমরা জিতব, সেখানে ভোটে লড়তে এসেছে।” সেলিমের প্রসঙ্গে বলেন, “মুর্শিদাবাদে বাজপাখি এসেছে ভোট কাটতে। আমি জাকির (হোসেন) ও খলিলুরকে বলছি, বিষয়টা দেখতে হবে।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম পাল্টা বলেন, “বাজপাখি বলেছে, তাতে আমার আপত্তি নেই। বাজ মানে শিকারি পাখি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরএসএস-এর পোষা পায়রা, মোদীর খোপে থাকেন।”
ভগবানগোলায় মমতা আরও বলেন, “যত দিন যাচ্ছে, বিজেপির বুক দুরু দুরু করছে। তাই হাত জোড় করে বলছি, ভোট ভাগ করবেন না।” তাঁর কথায়, “বাংলায় তৃণমূল ছাড়া ইন্ডিয়া-র সরকার তৈরি হতে পারে না। তাই সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভোট ভাগ করতে বিজেপির পরিকল্পনা মতো সিপিএম-কংগ্রেস ভোটে দাঁড়িয়েছে।”
সেলিম বলেন, “উনি সংখ্যালঘুকে শুধু ভোটার মনে করেন। ১০ হাজার মাদ্রাসা দেব বলে দেননি কেন? ওয়াকফ বোর্ডের চুরি কেন বাড়িয়েছেন? সংখ্যালঘু বিত্ত উন্নয়ন নিগম চুরি করে ফাঁক করে দিলেন কেন? এসএসকে, এমএসকে বা মাদ্রাসা কমিশন তুলে দিয়েছেন কেন?”
বিজেপির মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সৌমেন মণ্ডলও বলেন, “উনি হারের হাওয়া বুঝেই এ সব অবান্তর কথা বলছেন।” জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাসও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কের বিচ্যুতি ঘটেছে। বিজেপি যে তৃণমূলের পরম বন্ধু, বিজেপি-বিরোধী ইন্ডিয়া জোট থেকে বেরিয়ে সেটা প্রমাণ করেছেন তৃণমূলনেত্রী।”