(বাঁ দিকে)মহম্মদ সেলিম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের সমর্থনে। খড়গ্রামের সেই সভা থেকে পাশের কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ নিয়ে দলকে সতর্ক করলেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বললেন, ‘‘পাশের কেন্দ্র মুর্শিদাবাদে উড়ে এসে বাজপাখি দাঁড়িয়েছে। আমাদের ভোট কেটে, সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে চাইবে।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘আপনারা সবাই সক্রিয় হোন। আমি জাকিরকেও (বিধায়ক জাকির হোসেন) বলেছি।’’ মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেলিমের উদ্দেশেই মমতা ‘বাজপাখি’ বলে কটাক্ষ করেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে। কারণ এ কথা বলার আগেই সেলিমের নাম করেই মমতা আক্রমণ শানিয়েছেন জঙ্গিপুরের সভায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের পাক্কা আসনে জল ঢালতে এসেছে। আপানারা এই ভুল করবেন না। আর সুযোগ পাবেন না। মুর্শিদাবাদে সেলিমকে পাঠিয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে ইমরানকে (কংগ্রেস প্রার্থী আলি ইমরান রামজ়) পাঠিয়েছে। মালদহে আর এক জনকে পাঠিয়েছে। ভোট ঘেঁটে দিয়ে বিজেপিকে জেতাতে চায়।’’ তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর গত লোকসভা ভোটেই মুর্শিদাবাদে প্রথম খাতা খুলেছিল ঘাসফুল শিবির। মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুরে জয় পেয়েছিল তারা। সেই সময়ে তৃণমূলের তরফে মুর্শিদাবাদের সংগঠন দেখতেন শুভেন্দু অধিকারী।
তৃণমূলনেত্রীর কথার প্রতিক্রিয়ায় সিপিএম নেতা তথা দমদমের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি ভোটকে তৃণমূলের সম্পত্তি মনে করছেন। কিন্তু মানুষ দাসত্ব ভাঙছেন। তাই উনি ভয় পাচ্ছেন। আজকের বক্তৃতা থেকে আতঙ্ক স্পষ্ট।’’
২০০৯ সালের লোকসভা ভোট থেকেই বাংলার সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিকে যেতে শুরু করেছিল। তার পর গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘু ভোটকে কার্যত রাজনৈতিক পুঁজিতে পরিণত করেছে তৃণমূল। এ বারই প্রথম লোকসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের জোট হয়েছে। দু’দিন আগে সেলিমের সমর্থনে প্রচার করতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, ‘‘সেলিমভাইকে জেতাতে দরকারে কংগ্রেস কর্মীদের জান দিয়ে জিতে হবে। আমি সেলিমভাইকে বলেছিলাম, আপনি মুর্শিদাবাদে দাঁড়ান। মুর্শিদাবাদের মানুষ মেহমানি করতে ভুল করে না।’’ ডোমকলের সেই সভায় লোকও হয়েছিল দেখার মতো। যাকে ‘মিনি ব্রিগেড’ আখ্যা দিয়েছিলেন স্বয়ং সেলিম।
রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, মুর্শিদাবাদ আসনে সিপিএম এবং কংগ্রেসের ভোট এক জায়গায় এলে তৃণমূলের জন্য তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগামী ৭ মে তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ মুর্শিদাবাদে। ওই দিনই ভোট হবে জঙ্গিপুরেও। সোমবার মমতা সংখ্যালঘুদের ভোটকে ‘আমাদের ভোট’ আখ্যা দিয়ে সতর্ক করতে চাইলেন।