জলপাইগুড়ির বিদায়ী বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। —ফাইল চিত্র।
তিনি চিকিৎসক। বছর পাঁচেক আগে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছিলেন, চিকিৎসক হিসাবেই যা রোজগার, তার বাইরে আয়ের পথ নেই। গত লোকসভা ভোটে তিনি জিতেছিলেন। পাঁচ বছর সাংসদ থাকার পরে, সংসদের বেতন-সহ আরও একটি পথে আয়ের মুখ দেখেছেন জলপাইগুড়ির বিদায়ী বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। এ বারের লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে হলফনামা দিয়ে তিনি নিজেকে ‘গায়ক’ ঘোষণা করেছেন। হলফনামায় তাঁর ঘোষণা, তিনি চিকিৎসক, সাংসদ এবং গায়কও। হলফনামায় জানিয়েছেন, চিকিৎসা করা, সাংসদের বেতন ছাড়া, তাঁর আয় হয় গান গেয়েও। সভা-প্রচারে কখনও সখনও সাংসদকে মাইক হাতে গান গাইতে দেখা এবং শোনা গিয়েছে বটে। তবে তিনি পেশাদার গায়ক কবে হলেন, বিস্মিত অনেক
বিজেপি কর্মীও।
যদিও জয়ন্ত বলেন, “আমি গায়ক। আমার গানের একটি রেকর্ডও বেরিয়েছে। সরকারি নানা অনুষ্ঠানে গান গেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনেও গেয়েছি।” গান গেয়ে কত আয় হচ্ছে? জয়ন্তের জবাব, “ওই যৎসামান্য। সরকারি নানা অনুষ্ঠানে গাইলে, না চাইলেও অল্প কিছু সাম্মানিক সরাসরি অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়।”
তৃণমূলের এ বারের লোকসভার প্রার্থী ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে জেতা নির্মলচন্দ্র রায়। তিনি সেই উপনির্বাচনের সময় থেকে গান গেয়েছেন বিভিন্ন সভা-অনুষ্ঠানে। ভাওয়াইয়া গানের উপরে তাঁর নানা চর্চাও রয়েছে। নির্মল বলেন, "উনি (জয়ন্ত) যেহেতু হলফনামায় লিখেছেন, উনি গায়ক এবং ওঁর রেকর্ড বেরিয়েছে, উপার্জন করেছেন। তা হলে হয়তো সত্যিই উনি এই কাজ করেন। আমিও ভাওয়াইয়া গানের চর্চা করি। তবে নিজেকে গায়ক বলে
দাবি করি না।"
প্রাক্তন আইএএস অফিসার সুখবিলাস বর্মা লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়ে কখনও হেরেছেন, কখনও জিতেছেন। এই প্রাক্তন আমলা বছর ১৫ আগে যখন প্রথম বার লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তিনি দোতারা বাজিয়ে সভা-সমিতিতে গান গেয়ে চমক দিয়েছিলেন। সুখবিলাস বলেন, "জয়ন্ত রায়ের গান শুনেছি। ও দোতারাও বাজায়। অনেকের মতোই গায়। ভাল লাগে।"
জয়ন্ত এ বার মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েও দু’কলি গেয়েছেন। জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “জয়ন্ত রায় একাধিক বার বিভিন্ন সভায় গান গেয়েছেন। তাঁর গায়ক পরিচয় নতুন নয়। তাঁর কাছে অনেকেই গান শুনতেও চান।’’