ইউসুফ পাঠান। —ফাইল চিত্র।
সারা রাজ্যই তাকিয়ে ছিল বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের দিকে। বহরমপুরে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী ও মুর্শিদাবাদে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম দাঁড়িয়েছিলেন। দু’জনেই জিতলে রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে বাম-কংগ্রেসের পালে নতুন করে হাওয়া উঠত। কিন্তু দু’জনেই পরাজিত হলেন তৃণমূলের কাছে।
এর মধ্যে অধীরের পরাজয় মানুষকে অবাক করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন বহরমপুরে এসে তাঁর বিরুদ্ধে লড়তে। দেখা গেল, তৃণমূল নেত্রীর প্রার্থী, রাজনীতিতে আনকোরা ইউসুফ পাঠানের কাছেই পরাজিত হলেন পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরী। কেন এমন ফল হল, তার উত্তরে অধীর এ দিন বলেন, ‘‘ভোট ঠিকঠাক হয়েছিল। আমাদের চেষ্টা ত্রুটি ছিল না। পাঁচ বার পরপর জিতেছিলাম মানুষের দয়া-দোয়া আশীর্বাদ সহযোগিতা ছিল তাই। এ বার মানুষ মনে করেছে হারানো দরকার, তাই মানুষ হারিয়েছে। কোনও অভিযোগ নেই আমার। আগামী দিনে ইউসুফ পাঠানের চলার পথ সুগম তার জন্য আমার শুভকামনা থাকবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুরে আমাদের প্রার্থী মনোজ চক্রবর্তী হেরেছিলেন। আমরা এ সময় ভেবেছিলাম হয়তো অনেকটা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। কিন্তু দেখলাম বহরমপুরে মানুষের কাছে সেই সমর্থন পেলাম না।’’ ইউসুফ বলেন, ‘‘প্রথম দিন থেকেই বলছি আমি অধীর চৌধুরীকে সম্মান করি। সিনিয়র নেতা তিনি। সিনিয়র নেতাই থাকবেন।’’
বামেরা মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রকে পাখির চোখ করে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে নিয়ে এসেছিলেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে। আর শুরু থেকেই প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন বামেদের ওই নেতা। এক দল নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব সেলিমের হয়ে প্রচারে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায়। প্রায় দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে প্রচার ছেড়েছেন তারা। ফলে প্রচার ঝড়ে আবু তাহের খানের চাইতে অনেকটাই এগিয়েছিলেন সেলিম। বাম-কংগ্রেসের নেতারাই বলেছিলেন, মজবুত জোট হয়েছিল মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে। কিন্তু ফল প্রকাশের দিন যাবতীয় হিসেব-নিকেশ বদলে গেল। জয়ের হাসি হাসলেন তৃণমূলের আবু তাহের খান। সেলিম বলেন, "কেবল লক্ষীর ভান্ডার নয়, আরও অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করেছে এ বারের নির্বাচনে। যেটা এখনই আমরা বলতে পারব না। দলের নেতৃত্ব ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনার পরেই আমরা বলতে পারব কী কারণে এমন পরাজয় হল আমাদের।’’