স্বপন ও অসীমের এই ছবি নিয়ে বেধেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
পাশাপাশি সোফায় বসে পরস্পরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন দু’জনে। এক জন তৃণমূলের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। অন্য জন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার। সমাজমাধ্যমে ঘোরা এই ছবি ফের উস্কে দিয়েছে বিজেপি-তৃণমূল আঁতাতের জল্পনা। ছবিটিকে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছে সিপিএমও। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দু’দলের দাবি, মনোনয়নের স্ক্রুটিনির দিন জেলাশাসকের দফতরে পাশাপাশি বসে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলেছেন দু’জনে। তা নিয়ে অযথা জলঘোলা করতে চাইছে সিপিএম।
বর্ধমান পূর্বের সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁয়ের দাবি, ‘‘ছবি দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের আঁতাতের কথা বলছি আমরা। বামেদের দমাতে হয়তো তাঁরা নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা করছিলেন। ওষুধের দাম বৃদ্ধি-সহ নানা বিষয় নিয়ে দু’দলের প্রতি মানুষ ক্ষিপ্ত।’’ যদিও তৃণমূলের মন্ত্রীর দাবি, লোকসভা ভোটের দলীয় প্রার্থীর স্ক্রুটিনি উপলক্ষে সম্প্রতি জেলায় গিয়েছিলেন তিনি। কাজ মেটার পরে কাছেই একটি ঘরে সোফায় বসেছিলেন। সেই সময় বিজেপি প্রার্থী পাশের সোফায় এসে বসেন। তাঁর দাবি, ‘‘কেউ যদি পাশে থাকা আসনে বসেন তাতে আমার কী করার আছে? বিষয়টি কেন এত জলঘোলা বুঝি না। এটা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সৌজন্যমূলক দু’ একটি কথার মধ্যে ওঁকে বলি নিজের জায়গা ছেড়ে এখানে কেন দাঁড়াতে এসেছেন!’’
জেলার এক তৃণমূলের নেতার দাবি, লোকসভা ভোটের সময় এই ধরনের ছবি ভাইরাল হওয়া বিপজ্জনক। অনেকেই ছবি দেখে মনগড়া ধারণা তৈরি করে নিতে পারেন। এখন সামাজিক মাধ্যমের যুগ। এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে সাবধান থাকতে হবে।
জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ত্রীর পাশে বসে থাকা দলীয় প্রার্থীর ছবি রাজ্য নেতাদের হাতেও পৌঁছে গিয়েছে। এক প্রভাবশালী নেতা টেলিফোনে ছবিটি সম্বন্ধে জানতে চান। তবে কোন পরিস্থিতিতে তাঁরা পাশাপাশি বসেছিলেন তা জানার পরে আর বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখাননি।ছবির বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমেই মুখ খুলেছেন হরিণঘাটার বিধায়ক, কবিগায়ক অসীম। তিনি বলেন, ‘‘স্ক্রুটিনির দিন জেলাশাসকের দফতরে সমস্ত দলের লোকজনেরা হাজির ছিলেন। যেখানে স্ক্রুটিনি হচ্ছিল তার কিছুটা দূরে অন্য একটি ঘরে আমি, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী, মা শর্মিলা সরকার (তৃণমূল প্রার্থী), আমার নির্বাচনী এজেন্ট শুভাশিস হালদার সহ কয়েক জন বসেছিলাম। মন্ত্রী আমাকে জানান, আপনি বিরোধী দল করলেও আপনাকে আমরা সম্মান করি।আমি নিজেও কবিগান ভালবাসি। ওঁকে এক কলি গানও শোনাই।’’ তাঁর দাবি, কথাবার্তার সময় কয়েক জনকে ছবি তুলতে দেখা যায়। তবে কাউকে বাধা দেননি তাঁরা।
অসীম বলেন, ‘‘তৃণমূল হলেও পাশে বসা কোনও অন্যায় নয়। আমরা যখন রাজনীতিক বক্তব্য রাখি তখন যাঁর যাঁর কথা বলি। মন্ত্রীর দলের আদর্শের সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শ মেশে না। সাধারণ মানুষকে বলব যাঁরা ছবি তুলে অসৎ উদ্দেশে ভাইরাল করার চেষ্টা করেন, তাঁদের থেকে সাবধান থাকুন।’’