Lok Sabha Election 2024

‘গুন্ডারাজ’-এর বিরুদ্ধে ভোট দেবেন মানুষ, আশায় বিরোধীরা

দিল্লির দৌড়ে কে কোথায়? কোন দল কী ভাবে ঘর গোছাচ্ছে? কোথায় কোন কাঁটা বেগ দিচ্ছে কাকে? লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভা ভিত্তিক খোঁজখবর। সেই সঙ্গে কোন বিষয়গুলি মাথায় রেখে বুথমুখী হবেন ভোটার, সে দিকে নজর রাখল আনন্দবাজার। আজ, বসিরহাট উত্তর

Advertisement

নির্মল বসু 

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ০৯:১৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল হলেও, বসিরহাট উত্তর বিধানসভা বামেদের দখলে ছিল। পরে উপনির্বাচনে এখানে জেতে তৃণমূল। তারপর থেকেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভায় প্রায় ৯০ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও বড় জয় পায় শাসকদল। এ বারও এই কেন্দ্র থেকে বড় ব্যবধানে জয়ের ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত ঘাসফুল শিবির। তবে বিরোধীদের দাবি, ‘গুন্ডারাজ’ ও ‘ভোট-সন্ত্রাস’ রুখতে পারলে ফল অন্য রকম হবে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, বসিরহাট উত্তর বিধানসভা এলাকা বরাবরই উত্তেজনাপ্রবণ। ২০২১ সালে ভোট পরবর্তী হিংসায় পানিগোবরায় শাসক ও বিরোধীদের বিবাদে ১০-১৫টি বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক হানাহানি লেগে থাকে এলাকায়। মেছোভেড়ি এবং ইটভাটা অধুষ্যিত এই এলাকা অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল বলেও অভিযোগ। বিভিন্ন এলাকায় দেদার বিকোয় বেআইনি গাঁজা, হেরোইন। সাট্টা, জুয়ার আসর বসে। বিরোধীদের দাবি, শাসক দলের মদতেই এলাকায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য চলে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন ভোটের আতঙ্কের স্মৃতি এখনও টাটকা। তাই নির্বাচন এলেই ভয় হয়।

বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র বলেন, “এই বিধানসভা এলাকায় গুন্ডারাজ চলে। ভোটাররা তাঁদের নিজেদের ভোট দিতে পারেন না। তাই এমন ফলাফল হয়। এই নির্বাচনে আর সেটা হতে দেব না। বসিরহাট উত্তরের মানুষকে আমি আশ্বস্ত করতে চাই, এ বার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী কোনও ঝামেলা করার সুযোগ পাবে না। ভোটের পরেও কোনও হিংসা হতে দেব না।” তিনি আরও বলেন, “সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরাও তৃণমূলের বিসর্জন চান। তাঁরাও নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে পদ্মফুলে ভোট দেবেন। তৃণমূল ওদের ভুল বুঝিয়েছে। তৃণমূলে রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ায়।”

Advertisement

সিপিএম প্রার্থী নিরাপদ সর্দার বলেন, “২০১১ সালে রাজ্যে পট পরিবর্তন হলেও বসিরহাট উত্তর বামেদের দখলেই ছিল। তৃণমূল যে পরিমাণ লুটতরাজ, গুন্ডামি করেছে, তাতে আবারও মানুষ বামপন্থীদেরই বেছে নেবেন। আমি বিশ্বাস করি, সমাজবিরোধীরা শেষ কথা বলবে না। শেষ কথা বলবে জনগণ। বিজেপির ধর্মীয় বিভাজন এ বার আর চলবে না। এখানে সংখ্যালঘু বলে কেউ নেই, মেহনতি মানুষরাই সংখ্যাগুরু। তাদের ভোটেই সিপিএম এগিয়ে থাকবে।”

তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আব্দুল্লাহ রনির আবার দাবি, “২০১৯ সালে বিরোধীদের বিধায়ক থাকলেও আমরা প্রায় ৯০ হাজার ভোটে এগিয়েছিলাম। মানুষ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এবং শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকেই বেছে নেবেন। কেন্দ্রে মোদী যেমন নাটক করছেন, সন্দেশখালির নায়িকাও (রেখা পাত্র) তেমন আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় নাটক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে নাটক জমল না। রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পে ছাত্রছাত্রী, খেটে খাওয়া মানুষ থেকে সবাই উপকৃত।”

বসিরহাট কেন্দ্রে লড়াইয়ে রয়েছে আইএসএফও। সংখ্যালঘু অধুষ্যিত বসিরহাট উত্তরে আইএসএফ বিরোধী ভোটে ভাগ বসাতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রনির অবশ্য দাবি, “আইএসএফকে ভোট দেওয়া মানেই বিজেপিকে অক্সিজেন দেওয়া। তা মানুষ বুঝে গিয়েছেন।” বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী আখতার রহমান বিশ্বাস বলেন, “মানুষ আইএসএফকে চাইছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement