—প্রতীকী চিত্র।
তিন শতাংশের কিছু কম ভোট পড়লেও গত লোকসভার সঙ্গে এ বারের ভোটদানের প্রবণতার মিল অনেকটাই। শেষ হিসাব অনুযায়ী, জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৮৩.৬৬ শতাংশ, যা রাজ্যের সার্বিক গড় থেকে বেশি। প্রথম পর্যায়ে ভোট হওয়া কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের ভোট শতাংশের চেয়েও বেশি। কোচবিহারে ৮২.১৭ এবং আলিপুরদুয়ারে ৭৯.৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে ভোট পড়েছিল ৮৬.৫১ শতাংশ। সে নিরিখে ২.৮৫ শতাংশ ভোট কম এ বার। গত লোকসভার মতো এ বারেও ময়নাগুড়ি বিধানসভায় সর্বাধিক ভোট পড়েছে, প্রায় ৮৭ শতাংশ। তার পরেই রয়েছে রাজগঞ্জে প্রায় ৮৬ শতাংশ। গত লোকসভা ভোটেও ময়নাগুড়ি এবং রাজগঞ্জ ভোট শতাংশের শীর্ষে ছিল। এ বারে মেখলিগঞ্জে ৮৫ শতাংশ, ধূপগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে প্রায় ৮৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে ভোট পড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য ভাবে, চা বলয় মালবাজারে ভোট পড়েছে সব চেয়ে কম, ৭৯ শতাংশ। ভোট শতাংশ নিয়ে নিজেদের মতো চর্চা করছে যুযুধান দলগুলি। তবে চা বলয়ে কম ভোট পড়ায় ‘চাপে’ বিজেপি। অন্য দিকে, পুর এলাকাগুলির ভোট নিয়ে ‘শঙ্কায়’ রয়েছে তৃণমূল।
গত লোকসভা ভোটে চা বলয় ঢেলে ভোট দিয়েছিল বিজেপিকে। সবুজ চা বলয় হঠাৎ বদলে গিয়েছিল গেরুয়ায়। গত বছর ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে চা বলয়ে ভোট কম পড়েছিল। যার ফলে, চা বলয়ে বিজেপির এগিয়ে থাকার ব্যবধানও কমেছিল। ধূপগুড়ি বিধানসভা বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। এ বারেও মালবাজারে ভোট তুলনামূলক কম পড়ায় কপালে ‘ভাঁজ’ বিজেপির নেতা-কর্মীদের একাংশের। চা বলয় নিয়ে আগে থেকেই আশঙ্কায় ছিলেন বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায়। ভোটের দু’দিন আগে, রামনবমীর মিছিল শেষ করে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “চা বলয় নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’ সাংসদ দাবি করেছিলেন, চা বলয়ে তৃণমূলের পাট্টা বিলি নয়, ভোট ব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি আশঙ্কায়। তৃণমূলের দাবি, চা বলয়ে তাদের ভাল ভোট হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “বিজেপিকে তো কোথাও দেখাই গেল না। চা বলয়ে আমরাই ভোট করিয়েছি। সাধারণ শ্রমিকরা আমাদের দলের ক্যাম্প অফিসে এসেছেন, সেখানেই বসেছেন।”অন্য দিকে, বিপুল ভোট হয়েছে জেলার পুর এলাকাগুলিতে। বিশেষত, ময়নাগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে। গত পুরভোটে এই দুই এলাকাতেই ছাপ্পা থেকে বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছিল। প্রকাশ্যে ভোটকর্মীদের হুমকি দেওয়া থেকে ইভিএমের দখলের অভিযোগ উঠেছিল। এ বছর সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল। কোথাও কোনও অশান্তির অভিযোগ ওঠেনি। যে বুথগুলিতে গত পুরভোটে অভিযোগ ছিল, সেখানে এ বার বিপুল সংখ্যক ভোট হয়েছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী পুরসভা এলাকার বুথগুলিতে শুক্রবার সকাল থেকে ঘুরেছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে মানুষ ভোট দিয়েছে। শহরে বিজেপি কয়েক হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “সব জায়গায় খুব ভাল ভোট হয়েছে। শহর থেকেও এগিয়ে থাকব।”