প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
ক্ষমতা থাকলে কংগ্রেস লিখিত ভাবে ঘোষণা করুক ধর্মের ভিত্তিতে তারা সংরক্ষণ করবে না— আজ ঘরের মাঠে দাঁড়িয়ে এ ভাবেই কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতে আজ এবং আগামিকাল মিলিয়ে ছ’টি জনসভা করবেন তিনি।
বনসকণ্ঠের প্রচারসভার সূচনা পর্বে আজ মুসলিমদের নাম করে মেরুকরণের প্রয়াসী হন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘মুখ’। বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের উদ্দেশ্য, তফসিলি জাতি ও জনজাতি, দলিত, সমাজের পিছিয়ে থাকা গরিব অংশের সংরক্ষণ লুট করে মুসলিমদের দেওয়া। শাহজাদা (রাহুল গান্ধী) এবং তাঁর দলের সকলকে চ্যালেঞ্জ করছি, হিম্মৎ থাকলে ঘোষণা করে দেখান, আপনারা ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ করবেন না, সংবিধানের সঙ্গে খেলা করবেন না। ওরা তা ঘোষণা করতে পারবেন না, কারণ ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। মোদী যত দিন বেঁচে আছে কংগ্রেসকে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের খেলা খেলতে দেবে না।’’
আজ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অসত্য প্রচারের অভিযোগ তুলেছেন মোদী। তাঁর অভিযোগ, অন্য বারের লোকসভা নির্বাচনের মতো এ বারেও অসত্য কথা বলে ময়দানে নেমেছে কংগ্রেস। তাঁর কথায়, ‘‘আগে যেমন রাফালের খেলনা নিয়ে মঞ্চে উঠত, এখন উঠছে সংবিধান নিয়ে! জাল ভিডিয়ো চালিয়ে প্রচার করছে, আমরা নাকি সংরক্ষণ কেড়ে নেব। সমস্ত মিথ্যা প্রচার। বাবা সাহেব অম্বেডকরের দেওয়া সংবিধান বদলানোর পাপ কাজ করতে আমার জন্ম হয়নি। এই মিথ্যার শাস্তি পাবে কংগ্রেস। দেখবেন এ বার তারা গতবারের চেয়েও কম আসন পাবে।’’
প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর নেতারা তাঁদের প্রচারে কংগ্রেসকে নিশানা করে এক বার বলছেন, কংগ্রেস এক্স রে করে গরিব মানুষের ধনসম্পত্তি কেড়ে নেবে। আবার বলছেন তফসিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসি-দের সংরক্ষণ কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের দিয়ে দেবে। আজ কিছুটা ব্যঙ্গের সুরে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ। লিখেছেন, ‘প্রথমে বলে মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেবে। তার পর বলে জমি কেড়ে নেবে। এর পর বাড়িঘরের কথায় এল। এখন বলছে গরু-মোষও বিপদে! হয়তো তাঁর ওই ছবিটা মনে পড়ে গিয়েছে’।
কংগ্রেস দেশ ভাগের প্রচারও করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের বড় বড় নেতারাও দেশকে ভাঙার কথা বলছেন। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া মঞ্চের একটাই রাজনীতি— দেশ অরাজকতা তৈরি করো, অস্থিরতা তৈরি করো।’’ সিএএ নিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনা করে তাঁর যুক্তি, ‘‘দেশ ভাগের পরে যে সকল হিন্দু, শিখেরা পাকিস্তানে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সুবিচারের জন্যই সিএএ আইন।’’
রাহুলের ‘মহব্বত কি দুকান’ মন্তব্যকে ব্যঙ্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসলে যেটাকে ওরা মহব্বত কি দুকান বলছে সেটা জালি কারখানা। জাল ভিডিয়ো, কথা, স্লোগান পাওয়া যায়। ২০১৪ তে যখন ক্ষমতায় আসি কংগ্রেসের নেতারা আমাকে নিয়ে মজা করতেন। বলতেন, চাওয়ালা আর কী করবে! ডাল ভাত খাওয়া গুজরাতি কী করবে! মোদী গরিবের ছেলে, ডাল ভাত খেয়ে কী করতে পারে দেখতে চাইলে আসুন দো দো হাত হয়ে যাক! হিম্মত থাকলে মুখোমুখি লড়াই করুন, জালি ভিডিয়ো দিয়ে করবেন না।’’