জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কলকাতার এমএলএ হস্টেলে জীবনকৃষ্ণ সাহা। নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগে টানা তেরো মাস ধরে বন্দি থাকার পরে সুপ্রিম কোর্ট জামিন মঞ্জুর করেছে। বুধবার জামিনের নথিপত্র জমা দেওয়ার পরে জেল থেকে ছাড়া পেতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাত হয়ে যাওয়ার কারণে এ দিন বাড়ি ফিরতে পারেননি বড়ঞার বিধায়ক তৃণমূলের জীবনকৃষ্ণ সাহা। আজ, বৃহস্পতিবার তিনি বিধানসভায় যাবেন, তার পরে বড়ঞায় যাবেন, এমনটাই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে। জীবনকৃষ্ণের অনুগামী বলে পরিচিত বড়ঞা ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি সামশের দেওয়ান বলেন, ‘‘জীবনদা বুধবার জেল থেকে ছাড়া পেতে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে বাড়ি ফেরেননি। এমএলএ হোস্টেলে থাকবেন। সকালে বড়ঞার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।’’
রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই) গ্রেফতার করার পর থেকে রাজ্য জুড়ে একের পর এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সব শেষে ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে যায় সিবিআই। তারপর ১৭ এপ্রিল ভোরে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। জীবনকৃষ্ণ তাঁর ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল ফোন বাড়ির ছাদ থেকে বাড়ির পিছনে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিলেন। ওই মোবাইল উদ্ধার করতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে সিবিআইয়ের কর্তাদের। পুকুরের জল ছেঁচে মোবাইল ফোন উদ্ধার করার পরে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের আন্দির বাড়ি ছাড়ে সিবিআই।
দীর্ঘ তেরো মাস ধরে বিচারাধীন বন্দি থাকার কারণে অনুগামীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি জীবনকৃষ্ণের। বিধায়কের জামিনের খবর পেয়ে অনুগামীদের বিধায়কের আন্দির বাড়িতে উঁকিঝুঁকি দিতে দেখা গিয়েছে। বিধায়কের বাড়ির সামনের ব্যবসায়ী, প্রতিবেশীদের দাবি জীবনকৃষ্ণ বিধায়ক পরে, আগে তাঁদের পাড়ার ছেলে, ছোট থেকে খুব কষ্ট করে বড় হয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, জীবন জেলে গিয়েছিলেন, তখন খুব খারাপ লেগেছিল, এখন জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরছেন ভাল লাগছে।
তবে দলীয় কর্মীদের মধ্যে জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে উচ্ছ্বাস, আবেগ দেখা দিলেও দলের ব্লক নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্ব জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে তেমন উৎসাহী নন। জীবনকৃষ্ণের প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা এমনকি বলছেন, ‘‘জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে মন্তব্য করলে রাজ্য নেতৃত্বের রোষের মুখে পড়তে হবে।’’