—প্রতীকী চিত্র।
গ্রামীণ এলাকায় পাওয়া তৃণমূলের বড় ‘লিড’ শেষবেলায় মুছে দিয়ে গত লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রের রং হয়ে গিয়েছিল গেরুয়া। ২০১৯ সালে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সেই ‘রং বদলে’ বড় ভূমিকা নিয়েছিল দুর্গাপুর শহর ও লাগোয়া এলাকার ভোট। এ বারও দুর্গাপুর নির্ণায়কের ভূমিকা নেয় কি না, নজর এখন সে দিকে।
দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্র থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ৪৯,৫১১ ভোটের ‘লিড’ পায়। দুর্গাপুর পূর্বে ২৬,৫৯১ এবং গলসি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ভাতার, বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ এবং মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়লেও, দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকার ভোটের জোরে শেষ পর্যন্ত বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে আড়াই হাজারের কিছু কম ব্যবধানে জিতে যান বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ আহলুওয়ালিয়া।
এ বার দুর্গাপুরের দু’টি বিধানসভা এলাকা থেকে তাঁরা বড় ব্যবধানে এগোনোর আশায় রয়েছে বলে দলের একাংশের দাবি। দলের একাধিক নেতার মতে, “দুর্গাপুর থেকে ভাল ‘লিড’ না পেলে এই কেন্দ্রে জয় কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে আমরা আশাবাদী।” বিজেপির দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, দুর্গাপুরের ভোটারেরা তৃণমূলের অরাজকতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে জয়ের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। গত বারের চেয়ে ব্যবধান অনেক বাড়বে।”
তৃণমূলকে খানিক আশা জোগাচ্ছে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফল। এই লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দুর্গাপুর পশ্চিম ছাড়া বাকি ছ’টিতেই সে বার জয়ী হয়েছে তৃণমূল। দুর্গাপুর পশ্চিমে বিজেপির কাছে হারলেও, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের থেকে এ বার ব্যবধান কমে প্রায় ৩৬ হাজার ভোটের। তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, “বিধানসভা ভোটের ফলেই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। বর্ধমান-দুর্গাপুরে তৃণমূলের জয় সময়ের অপেক্ষা!”
তবে সিপিএমের দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্য— দুই সরকারের কাজকর্ম নিয়েই রাজ্যের মানুষ বিরক্ত। তাই ভাল ফলের বিষয়ে আশাবাদী তারাও। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, “দুর্গাপুরের বন্ধ শিল্প, বেকারত্বের মতো সমস্যাগুলি নির্বাচনী প্রচারে প্রতিষ্ঠিত করে আমরা দ্বিমেরু (বিজেপি ও তৃণমূল) ধারণা ভেঙে দিয়েছি। তাই অমিত শাহ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুর্গাপুরে এসে শিল্প নিয়ে কথা বলতে হয়েছে। ফলের বিষয়ে আমরা আশাবাদী।”